দেশের ১ কোটি ২৯ লাখ তরুণ কাজে নেই, শিক্ষায়ও নেই
বাংলাদেশে পড়াশোনায় নেই, কর্মসংস্থানে নেই’ এমন নিষ্ক্রিয় তরুণের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ। অর্থাৎ, দেশের মোট তরুণদের ৪১ শতাংশ নিষ্ক্রিয়। এরমধ্যে ১৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ ছেলে এবং ৬১ দশমিক ৭১ শতাংশ মেয়ে।
গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস-২০২২’ প্রতিবেদনে এ হার তুলে ধরেছে।
সংস্থাটি বলছে, নিষ্ক্রিয় তরুণের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ১৫ থেকে ২৪ বছর ধরা হয়েছে। এ হিসাবে দেশে নিষ্ক্রিয় তরুণের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ।
বিবিএসের জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদন-২০২২ বলছে, দেশে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১৬ লাখ। অর্থাৎ, মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশের বেশি। ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস’ অনুযায়ী ওই জনসংখ্যার ৪০ দশমিক ৬৭ শতাংশ নিষ্ক্রিয়। তাদের সংখ্যায় প্রায় ১ কোটি ২৯ লাখ।
বিবিএসের ২০২২ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, দেশে নিষ্ক্রিয় ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণের হার ২২ শতাংশ। সংজ্ঞাগত ভিন্নতায় স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকসের সঙ্গে শ্রমশক্তি জরিপের ফলাফলের কিছু পার্থক্য রয়েছে।
নিষ্ক্রিয় তরুণের হার সবচেয়ে বেশি সিলেট বিভাগে, কম বরিশাল বিভাগে। সিলেটে ৪৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৪৩ দশমিক ৭৭, ময়মনসিংহে ৪০ দশমিক ৫০, খুলনায় ৩৯ দশমিক ৬৬, ঢাকায় ৩৯ দশমিক ৫৩, রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক শূন্য ৯, রংপুরে ৩৯ দশমিক ৪ এবং বরিশালে ৩৮ দশমিক ৩২ তরুণ নিষ্ক্রিয়।
দেশে বড় অংশের তরুণ নিষ্ক্রিয় কেন, এ প্রশ্নে ছেলে ও মেয়েদের ক্ষেত্রে উত্তর ভিন্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মেয়েদের একটি অংশ বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। আরেকাংশের বিয়ে হচ্ছে অল্প বয়সে। বিবিএসের হিসাবে, মেয়েদের বিয়ের গড় বয়স ১৯ বছর ৩ মাস। মানে হলো, তাঁদের যখন শ্রমবাজারে প্রবেশের কথা, তখন তাঁরা ঘর ও সন্তান সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। নারীর গৃহস্থালি কাজ কর্মসংস্থান হিসেবে গণ্য হয় না।
এছাড়া শিক্ষার মানে ঘাটতি, যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি না হওয়া, শোভন কাজের অভাব ও সামাজিক পরিস্থিতি নিষ্ক্রিয় তরুণের হার বেশি হওয়ার কারণ।
এ হার কমাতে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর দেওয়া, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের আবার শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনা ও নারীদের বিনামূল্যের পারিবারিক শ্রমের বোঝাও কমাতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।