গণপূর্তে হঠাৎ দুদক, নেপথ্যে কি
_-1210753.png?v=1.1)
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আজ মঙ্গলবার মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) গণপূর্ত অধিদপ্তরে প্রধান কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের পক্ষ থেকে এটি নিয়মিত অভিযানের অংশ বলা হলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন এর পিছনে রয়েছে ভিন্ন কোন গল্প। মূলত, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের প্রতি কোন পক্ষের সংক্ষুব্দ হওয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার সিটিজেন জার্নালকে বলেন, ‘একজন ঠিকাদারের কাছ থেকে আমরা অভিযোগ পেয়েছি এবং তা আমলে নিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করেছি। আইন মেনেই কাজ করা হচ্ছে। এখন সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থা তদন্ত করলে আরও স্বচ্ছতা আসবে। এতে সমস্যা নেই।’
একাধিক প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনটি প্রকল্পে অনিয়মের তথ্য পেয়ে তাৎক্ষণিক যাচাইয়ে জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে দুদকের একটি দল। বিশেষ করে দরপত্র আহ্বানের আগেই গণপূর্ত কর্মকর্তাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে দরসংক্রান্ত তথ্য পৌঁছে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। যে তিনটি দরপত্রের বিষয়ে একজন সংক্ষুব্দ ঠিকাদার অভিযোগ দিয়েছেন তা হলো, চলমান ঢাকার সার্কিট হাউজ নির্মাণ প্রকল্প, রমনা থানা কমপ্লেক্স প্রকল্প এবং শেরেবাংলা নগর সমন্বিত ভবন নির্মাণ প্রকল্প।
এ প্রকল্পগুলোর কাজ ন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই) নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে। গত বছরের ৫ আগষ্টের পর দেশের অন্যতম প্রভাবশালী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এনডিই নানামুখী চাপে পড়ে। এক পর্যায়ে প্রভাব দেখিয়ে মাহবুব নামের এক ব্যক্তি মালিকানাও হস্তান্তর করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনেকটা হতাশা নিয়ে বেশ কয়েক মাস অপেক্ষা করে সম্প্রতি এনডিই’র স্বত্ত্বাধিকারী রায়হান তা আবার ফিরে পান। সেই সঙ্গে পুনরায় ব্যবসায় সক্রিয় হন তিনি। এরইমধ্যে পূর্ত মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তে চলতি বছরের ১২ অক্টোবর পূর্ত মন্ত্রণালয় একটি আদেশ জারি করা হয়। সেখানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে এনডিই’র চলমান সকল কাজের বিল পরিশোধ বন্ধ রাখতে বলা হয়। সেই সঙ্গে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এজন্য তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত গণপূর্ত অধিদপ্তরে বাস্তবায়নাধীন যে সকল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ এনডিই’র মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে সে সকল কাজের বিপরীতে অর্থ পাচ্ছে না।
এদিকে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের (১৫তম ব্যাচ) চার প্রভাবশালী অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী প্রধান প্রকৌশলী চেয়ার পেতে প্রতিযোগীতায় নেমেছেন। এ তালিকায় আছেন সংস্থাটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (মেট্রোপলিটন জোন) খালেকুজ্জামান চৌধুরী, ময়মনসিংহ জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. মইনুল ইসলাম, ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল খায়ের এবং বিশেষ প্রকল্প ও খুলনা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সামসুদ্দোহা। দুদকের এ অভিযান প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার দৌড়ে থাকা ব্যক্তিকে চাপে রাখার কৌশল কি না তা মনে করছেন সংস্থাটির কেউ কেউ।