যেভাবে সাজানো হত জঙ্গী নাটক, উঠে এল ভয়ঙ্কর তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ জুন ২০২৫, ০৯:৩২ AM

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উচ্চ মহলকে সন্তুষ্ট করতে একাধিক কথিত জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছিল—এমনটাই উঠে এসেছে গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, এসব সাজানো ঘটনার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু কর্মকর্তা পদোন্নতি লাভ করেছেন।

অন্যদিকে এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় অনেকে রোষানলে পড়েছেন। গুম-খুন সমর্থন না করলেও সর্বোচ্চ মহলের নির্দেশ উপেক্ষা করতে পারেননি অনেক কর্মকর্তা। প্রতিবেদনে বাহিনীর ভেতরের দ্বন্দ্ব, হতাশা এবং মতবিরোধের চিত্র স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

গুম তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ভয়াবহ সব তথ্য। এতে বলা হয়েছে, গুমের শিকার অনেককে গুলি করে হত্যার পর ‘ক্রসফায়ারে নিহত’ বলে প্রচার চালাত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেক মরদেহ আলামত নষ্ট করতে নদীতে ফেলে দেওয়া হতো।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কিছু ভুক্তভোগীকে গুলি না করে ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করা হয়। মরদেহ গোপনে নিঃশেষ করতে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ইটভাটায়। এমনকি কারও কারও দেহ ট্রেন বা বাসের নিচে ফেলে ‘দুর্ঘটনায় মৃত্যু’ দেখিয়ে সাজানো হয়েছে নাটক।

এ বিষয়ে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য সাজ্জাদ হোসেন বলেন, "যে বর্ণনাগুলো দেওয়া হয়েছে তা প্রত্যক্ষদর্শীদের। ওই সব অপারেশনে যারা যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যকার কথা কিন্তু এটা। এগুলো কিন্তু ভুক্তভোগীদের কথা না। ওইসব অপারেশনে যেসব সৈনিক বা জুনিয়র অফিসাররা ছিল তাদের বক্তব্য এগুলো।"

গুম তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গুমের নির্দেশ অমান্য করা বা ভুক্তভোগীদের সহায়তা করার কারণে অনেক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্মকর্তা বিপাকে পড়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক কর্মকর্তাই ছিলেন নিরুপায়, কারণ তাঁদের ওপর ছিল উচ্চ মহলের চাপ। অনেককে জোর করেই এসব অভিযানে সম্পৃক্ত করা হয়েছিল।
 
সাজ্জাদ হোসেন আরও বলেন, "যারা কিলিং অপারেশনে জড়িত ছিল তাদের নানাভাবে পুরস্কৃত করা হতো।" 

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দায়মুক্তির সংস্কৃতি ও কাঠামো এখনও বহাল আছে, যা তদন্তে বাধা তৈরি করছে বলে জানিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।