দাঁত দিয়ে নখ কাটলে শরীরের যেসব ক্ষতি হতে পারে
অনেকেরই দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস রয়েছে। বিশেষ করে অত্যন্ত মানসিক চাপে বা উত্তেজিত হয়ে কিংবা উদ্বেগজনক অবস্থায় অনেকেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন। এ ছাড়াও খুব চাপে আছেন কিংবা মন ভালো নেই। মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক কিছু। এরই মধ্যে হাতের আঙুলটা মুখে পুরে দিচ্ছেন বারবার। দাঁত দিয়ে নখ কাটছেন।
গবেষণা বলছে, দাঁত দিয়ে নখ কাটার বদঅভ্যাস অনেকেরই আছে। আর এই বদঅভ্যাসই আপনার শরীরে ডেকে আনছে বড় রোগ।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, চিকিৎসার পরিভাষায় দাঁত দিয়ে নখ কাটার এই বদ অভ্যাসের নাম ডার্মাটোফেজিয়া। এতে সাধারণত উদ্বেগ থেকে দাঁত দিয়ে নখ কাটা বা আঙুলের চারপাশের চামড়া কামড়ানোর বদ অভ্যাসে তৈরি হয় খুব ছোট বয়স থেকেই। ডার্মাটোফেজিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছালে আঙুলের চামড়া পর্যন্ত ছিঁড়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। রক্ত বেরিয়ে যায়। তবু কোনও কিছু খেয়াল থাকে না। দীর্ঘদিনের এই অভ্যাস নখকে নষ্ট করে দেয়। নেল বেড নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ, নখের নীচের যে চামড়ার আস্তরণ থাকে, সেটা আর তৈরি হয় না। নখ ত্বকের গভীরে বসে যায়।
জেনে নিন দাঁত দিয়ে নখ কাটলে শরীরের কী ক্ষতি হয়—
দীর্ঘদিন ধরে দাঁত দিয়ে নখ কাটা বা আঙুলের চারপাশের চামড়া কামড়ানোর বদ অভ্যাসে জীবাণু সংক্রমণের একটা আশঙ্কা থেকে যায়। পাশাপাশি, মুখের লালা থেকেও হতে পারে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। চূড়ান্ত পর্যায়ে সংক্রমণ এতটাই বেড়ে যায় যে আঙুল কেটে বাদ দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। তাই, খুব চাপে কিংবা মন খারাপে উদ্বেগকে প্রশমিত করতে দাঁত দিয়ে নখ না কাটাটাই আপনার জন্য ভালো।
দাঁত নিয়ে নখ কাটলে নখের সব ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু পেটে প্রবেশ করে। যার ফলে পেটের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। পেটে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধলে তার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে।
অতিরিক্ত নখ কামড়ানোর ফলে নখের চারপাশের ত্বকও ফুলে যায়। E. coli এবং Salmonella এর মত রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াও জন্ম নিতে পারে দাঁতে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া সরাসরি দাঁতে পৌঁছায়।
এই ব্যাকটেরিয়া আপনার অন্ত্রে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। যার কারণে আপনাকে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনালের মতো মারাত্মক রোগের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যারা দাঁত দিয়ে নখ কাটেন, তাদের প্যারোনিচিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
এছাড়া দাঁত দিয়ে নখ কাটার ফলে দাঁতেরও ভীষণভাবে ক্ষতি হয়। এতে মাড়ি দুর্বল হয়ে যায়। এছাড়া মাড়িতে সংক্রমণ পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া হতে পারে দাঁত আলগা হয়ে যাওয়ার সমস্যাও।
দাঁতে জীবাণু বাসা বাঁধে। যা দাঁত থেকে সরাসরি পেটে প্রবেশ করে। ফলে ডায়ারিয়া, পেট ফাঁপার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই এই বদঅভ্যাস থাকলে অবিলম্বে তা ত্যাগ করুন।
নখ খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে নখ ছোট রাখুন। হাতকে যতটা সম্ভব ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন। নখে তিতা কিছু দিয়ে রাখুন, তাহলে দাঁতে নখ দিতে ইচ্ছে করবে না। দেখবেন একটু হলেও আটকাতে পারবেন নিজেকে।