জরিপে বাংলাদেশের নারীরা মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশ পিছিয়ে
দেশের মাত্র ২৪ শতাংশ নারী মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। পার্শ্ববর্তী ভারত ও পাকিস্তানে এ হার যথাক্রমে– ৩৭ ও ৩৩ শতাংশ। ইন্টারনেট ব্যবহারে পিছিয়ে থাকলেও বাংলাদেশের ৬৮ শতাংশ নারী মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এর মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী নারী ২২ শতাংশ। পাকিস্তানে ৫৩ শতাংশ নারী মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন; এর মধ্যে স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারী ২৬ শতাংশ।
চলতি মাসে প্রকাশিত মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) ‘মোবাইল ব্যবহারে লৈঙ্গিক পার্থক্য-২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার নিম্ন ও মধ্য আয়ের ১২টি দেশের তথ্য প্রকাশ করে জিএসএমএ। দেশগুলো হলো– এশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া; আফ্রিকার মিসর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল, নাইজেরিয়া ও উগান্ডা এবং লাতিন আমেরিকার গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো। গত বছর এসব দেশে জরিপ চালায় জিএসএমএ। এর মধ্যে ১১টি দেশে ১৫ বছর ও এর বেশি বয়সের ১ হাজার নারী ও পুরুষের ওপর জরিপ চালানো হয়। কেবল ভারতে ২ হাজার জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ৮৫ শতাংশ পুরুষের হাতে ফোন রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশ পুরুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের ব্যবধান অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে অনেক বেশি– প্রায় ৪০ শতাংশ। জরিপকৃত দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম নারী মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ইথিওপিয়ায়– ১৩ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি মেক্সিকোতে। দেশটির ৭৭ শতাংশ নারী মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কেনিয়ার ৯১ শতাংশ নারীর হাতে মোবাইল ফোন থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৩৯ শতাংশ।
জিএসএমএর জরিপ বলছে, বাংলাদেশে ৫০ শতাংশ নারী ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানলেও তারা তা ব্যবহার করেন না। এর বড় কারণ, শিক্ষা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাব; এ হার ৩৮ শতাংশ। এ ছাড়া ১১ শতাংশ নারী ফোন ও ৪ শতাংশের ডেটা কেনার সামর্থ্য নেই। বিশেষ করে বাংলাদেশ, কেনিয়া, নাইজেরিয়া ও উগান্ডায় ডেটা প্যাকেজের দাম একটি বড় সমস্যা।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও তাৎক্ষণিক এসএমএসের জন্য ইন্টারনেট বেশি ব্যবহার করেন নারীরা। ব্যবহারকারী নারীদের মধ্যে ৪৫ শতাংশ অনলাইনে খবর পড়েন। ১২ শতাংশ চাকরি ও ব্যবসা-সংক্রান্ত তথ্য খোঁজেন।
ইন্টারনেট ব্যবহার করে নেতিবাচক কনটেন্ট পেয়েছেন– এমন বাংলাদেশি নারীর হার ৫ শতাংশ। অনলাইনে হুমকি পেয়েছেন ৭ শতাংশ; অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন ৮ শতাংশ নারী।