অস্ট্রেলিয়ায় ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫৩ PM

এবার ফিলিস্তিনের পক্ষে রাস্তায় নেমে এলো হাজার হাজার জনতা। রবিবার প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজারো বিক্ষোভকারী সিডনির ঐতিহাসিক হারবার ব্রিজে মিছিল করেছে। গাজা উপত্যকায় শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার দাবিতে তারা এই পদযাত্রায় অংশ নেয়। যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সংকট ক্রমেই তীব্র আকার ধারণ করছে।

প্রায় দুই বছর ধরে চলমান যুদ্ধে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজায় ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সরকার এবং মানবিক সংস্থাগুলোর মতে, খাদ্য সংকটের কারণে সেখানে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

‘মার্চ ফর হিউম্যানিটি’ নামের এই পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেউ কেউ ক্ষুধার প্রতীক হিসেবে হাঁড়ি-পাতিল বহন করছিলেন।

ষাটোর্ধ্ব এক অংশগ্রহণকারী ডগ বলেন, "এবার যথেষ্ট হয়েছে। যখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ একত্রিত হয়ে আওয়াজ তোলে, তখন অন্যায়কে পরাস্ত করা সম্ভব হয়।"

পদযাত্রীদের মধ্যে বয়স্ক থেকে শুরু করে ছোট শিশুদের সঙ্গে পরিবারও ছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জও। অনেকেই ছাতা হাতে অংশ নেন, কেউ কেউ ফিলিস্তিনি পতাকা নাড়িয়ে স্লোগান দেন—“আমরা সবাই ফিলিস্তিনি।”

গত সপ্তাহে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ এবং রাজ্যের প্রিমিয়ার এই পদযাত্রা বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছিল। তারা বলেছিল, হারবার ব্রিজে মিছিল করলে নিরাপত্তা ঝুঁকি ও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে। তবে শনিবার রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, মিছিলটি অনুষ্ঠিত হতে পারবে।

পুলিশ জানিয়েছে, শত শত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং অংশগ্রহণকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে মেলবোর্নেও একই ধরনের প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সম্প্রতি ইসরায়েলের ওপর কূটনৈতিক চাপ বেড়েছে। ফ্রান্স ও কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ব্রিটেনও বলেছে, মানবিক সংকট সমাধান এবং যুদ্ধবিরতি না হলে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

ইসরায়েল এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছে, এটি হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল। হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরের হামলার পর ইসরায়েলি অভিযান শুরু হয়, যা গাজার বড় অংশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। ইসরায়েল মানবিক সহায়তা আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং হামাসের বিরুদ্ধে সহায়তা চুরির অভিযোগ তুলেছে।

অস্ট্রেলিয়ার কেন্দ্র-বামপন্থী প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, তিনি দুই-রাষ্ট্র সমাধান সমর্থন করেন। তার মতে, "সহায়তা বন্ধ রাখা এবং বেসামরিক মানুষ হত্যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।" তবে তিনি এখনও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেননি।

৮০ বছরের বিক্ষোভকারী থেরেস কার্টিস বলেন, "আমি অস্ট্রেলিয়ায় থেকে চিকিৎসাসেবা পাওয়ার মানবাধিকার ভোগ করি। কিন্তু ফিলিস্তিনের মানুষ হাসপাতাল বোমা হামলায় ধ্বংস হতে দেখছে, তাদের মৌলিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমি বিশেষভাবে এর বিরুদ্ধেই মিছিল করছি।"

সূত্র: রয়টার্স