যে কারণে প্রাক্তনকে বারবার মনে পড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৩ জুলাই ২০২৫, ১০:১৬ AM

প্রাক্তনের কথা মনে পড়া একটি স্বাভাবিক মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়া। এর পেছনে রয়েছে নানা আবেগী এবং মানসিক কারণ। পুরনো অভ্যাস, স্মৃতিময়তা, অসম্পূর্ণ অনুভূতি কিংবা বর্তমান জীবনের শূন্যতাই প্রাক্তনের স্মৃতিকে বারবার মনে করিয়ে দেয়। মস্তিষ্ক পরিচিত অভিজ্ঞতার পথেই হাঁটতে পছন্দ করে। তাই পুরনো সম্পর্কের স্মৃতি সহজে মন থেকে মুছে যায় না।

তবে বাস্তবতাই হলো—ভালোবাসা যেমন সত্য, তেমনই বিচ্ছেদও বাস্তব। যদিও মেনে নেওয়া বা মানিয়ে চলা সহজ নয়। এমনকি জীবনের সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও মনে পড়ে যায় সেই প্রাক্তনকে। এতে দোষের কিছু নেই। কিন্তু কেন এমন হয়? চলুন দেখে নিই এর কারণগুলো—

১. অভ্যাসের জালে আবদ্ধ জীবন:
মানুষ স্বভাবতই অভ্যাসের প্রতি নির্ভরশীল। গতকালের যিনি ছিলেন, আজ তার অনুপস্থিতি মেনে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই শূন্যতাই ঘুরে ফিরে মনে করায় পুরনো স্মৃতি।

২. ভালোবাসা ও ‘ফিল-গুড’ রাসায়নিক:
ভালোবাসার সময় শরীরে নির্গত হয় কিছু ‘ফিল-গুড’ হরমোন। যা মনকে রাখে উৎফুল্ল। বিচ্ছেদের পর তা বন্ধ হয়ে গেলে মন চায় সেই আগের অনুভূতি ফিরে পেতে।

৩. ‘ক্লোজার’-এর অভাব:
অনেক সময় সম্পর্কের শেষটা হয় প্রশ্নবিদ্ধভাবে, কোনো স্পষ্ট উত্তর ছাড়াই। এতে প্রাক্তনের কথা মনে পড়া খুব স্বাভাবিক। মনে জাগে নানা প্রশ্ন—“আমি কী ভুল করলাম?”, “কেন এমন হলো?”—এই অনিশ্চয়তাই স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে।

৪. একাকিত্ব ও পরিবর্তনের চাপ:
যেসব কাজ একসঙ্গে করতেন, এখন একাই করতে হয়। যে জায়গায় একসঙ্গে যেতেন, সেখানে একা গেলে পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়। ফলে মন হয়ে পড়ে ভারাক্রান্ত।

৫. নির্ভরতার ছায়া হারানো:
সম্পর্কে থাকার সময় সঙ্গীর উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা থাকলে বিচ্ছেদ অনেক বেশি ধাক্কা দেয়। একাকিত্ব গ্রাস করে। তখন জীবন চালিয়ে নেওয়ার পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

৬. স্মৃতি থেকে মুক্তি পেতে সময় দিন:
যেকোনো মানসিক ক্ষত সারতে সময় প্রয়োজন। প্রাক্তনের কথা ভুলে যাওয়ার জন্য নিজেকে জোর করলে উল্টো কাজ হয়। স্মৃতি আরও বেশি ঘিরে ধরে। তাই নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিন কাছের মানুষদের সঙ্গে। কথা বলুন, সময় দিন নিজেকে।

প্রাক্তনের স্মৃতি কষ্টের হলেও সেটি মানুষ হওয়ারই প্রমাণ। নিজেকে সময় দিলে এবং ধীরে ধীরে গ্রহণ করলে একসময় সেই স্মৃতিও একান্ত হয়ে যাবে অতীতের গল্পে।