বিশাল নিয়োগ আসছে স্বাস্থ্যখাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল জবস জার্নাল জবস
প্রকাশিত: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৩ PM

দেশের স্বাস্থ্যখাতে জনবল সংকট কাটাতে বড় পরিসরে নিয়োগ আসছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম জানিয়েছেন, ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে আগামী মাসে ৩ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি আরও ৩ হাজার ২০০ নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তা ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে স্বাস্থ্যখাতের সাফল্য, চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন সংশোধনের চেষ্টা চলছে। সরকারি-বেসরকারি কোলাবরেশনের মাধ্যমে রোগীদের ডায়ালাইসিস করা হবে। যেন সাধারণ মানুষের খরচ কমে এবং সেবাপ্রাপ্যতা সহজ হয়।
 
তিনি বলেন, উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধ বিমান দুর্ঘটনায় চিকিৎসা প্রদানে বিদেশ থেকে একাধিক চিকিৎসক টিম এসেছে। তারা জানিয়েছেন আমাদের চিকিৎসকরা নির্ভুল কাজ করছেন, আরও নিখুঁত হতে সহায়তা করছেন তারা।
 
নুরজাহান বেগম আরও বলেন, সরকারি সব হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টায় আছি। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা প্রদান না হলে অন্তত দুই শিফটে চিকিৎসাসেবা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে দুই শিফটে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
 
মেডিকেল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের হোস্টেলগুলোর অবস্থা খুবই শোচনীয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ১০ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতে ১৯টি হোস্টেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 
এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের মান বজায় রাখতে কিছু কিছু বেসরকারি মেডিকেল কলেজকে এক করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হবে না বলেও জানান তিনি।
 
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সরকারি ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বিদ্যমান স্বাস্থ্যসেবা পরিবর্তনের চেষ্টা করছি আমরা।
 
এ সময় তিনি স্বাস্থ্য সেবাখাতে দশটি রোগ চিহ্নিত করা কথা জানান। সেগুলো হলো-

১। মেধা জ্ঞান ও যোগ্যতা থেকে বিচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
২। অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা
৩। বিশেষায়ন নির্ভর চিকিৎসা প্রাথমিক চিকিৎসায় অনীহা।
৪। স্বচ্ছতার অভাব
৫। উৎসাহ ও মনোবলহীন স্বাস্থ্য সেবা দানকারী।
৬। যথাযথ মনন ও মানসিকতার অভাব
৭। নৈতিকতার অবক্ষয় ও স্বার্থের দ্বন্দ্ব
৮। পর নির্ভরশীলতা
৯। নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা
১০। পরিকল্পনা ও বরাদ্দের অভাব ও অসামঞ্জস্যতা।
 
সকল স্বাস্থ্য শিক্ষায় কোটা বাতিল হয়েছে মেধাই মুখ্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ১০ থেকে ১২০০০ মানুষ মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। সরকারি হাসপাতালে ১৫ হাজার বেড বাড়ানো দরকার।
 
ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, জনগণের নিরাপদ ওষুধ প্রাপ্তির জন্য কাজ করছে সরকার। আইওটির মাধ্যমে সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সেবা সরঞ্জাম মনিটর করা হবে। ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকলেই টের পাবে স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ। ১২ মাসের জায়গায় ১৮ মাস ইন্টার্নশিপ চালু করার পরিকল্পনায় আছি। যার মধ্যে ৬ মাস থাকতে হবে গ্রামে।

তিনি বলেন, অনৈতিক সুবিধা প্রাপ্তি বন্ধে ওষুধ কোম্পানি থেকে চিকিৎসকদের সকল উপহার ও সুযোগ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করা হবে। অনেক ওষুধের দাম কমানো হয়েছে। নয় মাসে কোন ওষুধের দাম বাড়েনি।
 
বিদেশি সহায়তায় দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে তিনটি বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান ডা. সায়েদুর রহমান।