ঋণ পরিশোধ হোক সময় মতো
প্রয়োজনে আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে আমাদের ঋণ নিতে হয়। ঋণের টাকায় প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে। তবে সাধ্যের বাইরে ঋণ দেওয়া-নেওয়া দুটিই ইসলাম নিষেধ করেছে। কারণ, তাতে সময়মতো ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কমে যায়। এর ফলে ঋণদাতাকে যেমন হতাশাগ্রস্ত হয়, ঋণগ্রহীতার আত্মমর্যাদাও ক্ষতির শিকার হতে হয়। তাই আমাদের হিসেব করে ঋণ দেওয়া ও নেওয়ায় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ঋণদাতার জন্য মহানবী (সা.)-এর দোয়া
ঋণ দিয়ে অন্যের পাশে দাঁড়ানো সামাজিক দায়িত্ব। এর মাধ্যমে সবার মধ্যে পারষ্পরিক ভালোবাসা ও সুসম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। রাসুল (সা.) ঋণদাতার কল্যাণ চেয়ে একটি দোয়া পড়তেন। দোয়াটি হলো-
«بَارَكَ اللهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ، إِنَّمَا جَزَاءُ السَّلَفِ الحَمْدُ وَالْأَدَاءُ»
উচ্চারণ : ‘বারাকাল্লাহু লাকা ফি আহলিকা ওয়া মালিকা, ইন্নামা জাজাউস সালাফি আলহামদু ওয়াল আদায়ু।
অন্য বর্ণনামতে, ‘ইন্নামা জাজাউস সালাফি আল-ওয়াফাউ ওয়াল হামদু।’
অর্থ : মহান আল্লাহ তোমার ওপর, তোমার পরিবার ও সম্পদের ওপর বরকত দান করুন। নিশ্চয় ঋণের প্রতিদান হলো ঋণদাতার প্রশংসা করা এবং তা পরিশোধ করা।’
হাদিস : আবদুল্লাহ বিন আবু রাবিয়াহ আল-মাখজুমি (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) হুনাইন যুদ্ধের সময় তাঁর কাছ থেকে ৪০ বা ৩০ হাজার ধার নেন। অতঃপর রাসুল (সা.) ফিরে এসে তাঁর পাওনা পরিশোধ করেন। তখন তিনি উল্লিখিত দোয়াটি পড়েন। (নাসায়ি, হাদিস নং : ২৬২৯)
ঋণ থেকে মুক্তির জন্য দোয়া
মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন যাতে তিনি ঋণে জড়িয়ে না পড়েন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজের পরে দোয়া করতেন—হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ ও ঋণ থেকে পানাহ চাচ্ছি। এক প্রশ্নকারী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি ঋণ থেকে বেশি পানাহ চান কেন? রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করে। (বুখারি, হাদিস: ২,৩৯৭)
হাদিসে ঋণ থেকে মুক্তির আরও কয়েকটি দোয়া রয়েছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমনপীড়ন থেকে। (বুখারি, হাদিস: ২,৮৯৩)
সংগ্রহ: কালের কণ্ঠ ও প্র.আলু