ধৈর্য মানুষের একটি বিশেষ গুণ
ধৈর্য আদর্শ মানুষের উত্তম চারিত্রিক গুণ। ধৈর্যের আরবি প্রতিশব্দ হলো ‘সবর’। এর আভিধানিক অর্থ বিরত থাকা, সহিষ্ণুতা, দৃঢ়তা, সহ্য করার ক্ষমতা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।
ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে জীবনের সব ক্ষেত্রে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রেখে দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহর আদেশসমূহ পালন করা। আর তিনি যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকাই হলো ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা।
ধৈর্য হচ্ছে মানুষের এমন একটি গুণ, যে কারণে সে অসুন্দর ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে। এটি মানুষের একটি আত্মিক শক্তি, যা দিয়ে সে নিজেকে সুস্থ ও সুরক্ষিত রাখাতে পারে। ধৈর্যের মাধ্যমে মানুষ কষ্ট-ক্লেশ, ব্যথা-যন্ত্রণা ও আঘাত সহ্য করতে সক্ষম হয়। কতিপয় ইসলামি স্কলারের মতে, সবর বা ধৈর্য ধারণ হলো ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা। অস্থির না হওয়া, বালা-মুসিবতকে মোকাবিলা করা। আর বালা-মুসিবতকে এমনভাবে মোকাবিলা করা, যাতে এর ফলে ব্যক্তির অন্তর উদ্বেলিত না হয় এবং মানসিক প্রশান্তি বজায় থাকে। পাশাপাশি নিজের জিহ্বাকে অভিযোগ-অনুযোগ করা থেকে বিরত রাখা এবং দেহের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে অস্বাভাবিক কাজ থেকে দূরে রাখা।
ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা মানবজাতির একটি মহৎ গুণ। ধৈর্যের মাধ্যমে আল্লাহকে স্মরণ করলে তিনি খুশি হন। মনে রাখতে হবে, সৎপথ পাওয়া মানব জীবনের অমূল্য সম্পদ। আর এ সৎপথ পাওয়ার জন্য ধৈর্য দরকার। ধৈর্য শক্তি মানুষের জন্য সৎকাজের সুযোগ ও ক্ষেত্র সৃষ্টি করে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে পাপকাজ থেকে বিরত থাকা যায়। ধৈর্য এমন এক আত্মিক শক্তি যা হৃদয়কে সৎ ও অবিচল রাখে। যারা ধৈর্যশীল হয় তারা পরকালে পুরস্কার তো পায়ই, একই সঙ্গে ইহকালীন জীবনেও সাফল্য পায় এবং তাদের জীবন হয় প্রশান্তিময়। তাই মানবজীবনে ধৈর্যের গুরুত্ব অপরিসীম।
ইসলামে ধৈর্যের প্রতি সীমাহীন গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় সৃষ্টি মানব জাতিকে ধৈর্যধারণের নির্দেশ দিয়ে কোরআনের বহু আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। তিনি পবিত্র কোরআনের ৯০টিরও বেশি স্থানে ধৈর্যের কথা উল্লেখ করেছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্যধারণ করো, ধৈর্যধারণে পরস্পর প্রতিযোগিতা করো এবং ধৈর্য সহকারে পরস্পরকে শক্তিশালী করো। আর আল্লাহকে ভয় করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।’ (সুরা আলে ইমরান ২০০)
ইবাদতে আল্লাহর আনুগত্যের ওপর ধৈর্য হলো সর্বোচ্চ ধৈর্যধারণ। এই প্রকারের ধৈর্যের ওপর আমল করার জন্য আল্লাহতায়ালা কোরআনে অসংখ্যবার আদেশ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আপনি তার ইবাদত করুণ এবং তাতে ধৈর্যধারণ করুণ, তথা সুদৃঢ় থাকুন।’ (সুরা মারইয়াম ৬৫) কোরআনের এই আয়াতে আল্লাহতায়ালা ‘ওয়াসতাবির’ শব্দ ব্যবহার করেছেন, যা ধৈর্যের সর্বোচ্চ স্তরকে বোঝায়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর আনুগত্যের ওপর ধৈর্যধারণ করতে আদেশ করা হয়েছে। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আপনি আপনার পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায় করতে আদেশ করুন এবং তাতে ধৈর্যধারণ করতাহা ১৩২)