ইব্রাহিম রাইসি মারা গেলে ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন কে?

দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার। গতকাল রবিবার (১৯ মে) দেশটির রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের বরাতে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এখন পর্যন্ত হেলিকপ্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে উদ্ধারকারী দল হেলিকপ্টারটি দেখতে পেয়েছে বলে আল জাজিরার খবরে জানানো গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রেড ক্রিসেন্ট।

এদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট আহত হয়েছেন কিনা বা তিনি আদৌ বেঁচে আছেন কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তিনি যদি মারা যান, তাহলে ইরানের প্রেসিডেন্ট হবেন কে?

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা বলছে, ইরানের সংবিধানে এ ব্যাপারে পরিষ্কার করেই বলে দেওয়া রয়েছে। তাতে বলা আছে, প্রেসিডেন্ট হঠাৎ মারা গেলে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পাবেন। 

বর্তমানে ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আছেন মোহাম্মাদ মখবার। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি মারা গেলে তিনিই এই দায়িত্ব পাবেন। আর এই দায়িত্বের অনুমোদন দেবেন দেশটির সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।  

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা: ইরানের প্রেসিডেন্ট কি বেঁচে আছেন, যা জানা গেলহেলিকপ্টার দুর্ঘটনা: ইরানের প্রেসিডেন্ট কি বেঁচে আছেন, যা জানা গেল
ইরানের রাজনৈতিক ধারায় দেশের সর্বোচ্চ নেতা হলেন সুপ্রিম লিডার, যে পদে এখন আছেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। আর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ক্ষমতাবলে দ্বিতীয়।

প্রেসিডেন্ট মারা গেলে প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট এই দায়িত্ব পাবেন। এরপর ৫০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে। এদিকে, ইরানের বেশ কয়েকটি সূত্র থেকে জানা যায়, আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির পর দেশটির সুপ্রিম লিডার হওয়ার কথা প্রেসিডেন্ট রাইসির। 

ইরানের বার্তা সংস্থা তাসনিমের এক প্রতিবেদনের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ বলছে, দুর্ঘটনার পর ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে সেখানে পাওয়া যায়নি। তবে, এতে এই খবরের কোনো সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি। 

ইরানের রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলের বরাতে এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, হেলিকপ্টার অবতরণ করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর উদ্ধারকারী দল সেখানে দ্রুত যায়। তবে, তারা উদ্ধার শুরু করতে পেরেছে কিনা জানা যায়নি।

ইরানের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেও সরকারিভাবে এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। এ ঘটনায় ইব্রাহিম রাইসি আহত হয়েছেন কিনা, তাও জানা যায়নি। 

বার্তা সংস্থা এপি বলছে, ইব্রাহিম রাইসি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশে গেছেন। আর এই দুর্ঘটনা ঘটেছে জলফা নামক এলাকার কাছে। প্রতিবেশী দেশ আজারবাইজানের সীমান্ত এলাকা এটি।

বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকারী দল ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না। উদ্ধারে যুক্ত হয়েছে রেড ক্রিসেন্ট ও সামরিক সদস্যরাও। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যম বলছে, এলাকাটি কুয়াশাচ্ছন্ন। এ কারণে হেলিকপ্টারের অবস্থান বোঝা যাচ্ছে না। 

দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এই বহরে তিনটি হেলিকপ্টার ছিল। যার মধ্যে দুটি নিরাপদে ফেরে। যে হেলিকপ্টারটি আছড়ে পড়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট ছাড়াও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমিরাব্দুল্লাহিয়ান ও আয়াতুল্লাহ মোহাম্মদ আলী আলি-হাসেম ছিলেন। আলী–হাসেম ওই অঞ্চলে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতার প্রতিনিধি ছিলেন।