দিনে ১০০ বার ফোন তরুণীর; পুলিশকে কল করে হাসপাতালে পাঠালো যুবক
প্রেমিকার জন্য প্রেমিকরা কতো কিছুই না করে। এসবের ইতিহাস রয়েছে ইতিহাসের পাতায়, খবরের পাতায়। অনেক নাটক সিনেমা, গানে গল্পেও রয়েছে এসবের কাহিনী। তবে শুধু গানে-গল্পে নয়, বাস্তবেও রয়েছে প্রেম রোগের উদাহরণ। আঠারো বছরের এক চীনা তরুণী ভুগছেন এই প্রেমের রোগে। মানসিক অবস্থা বুঝে তাঁর চিকিৎসাও চলছে। বিশেষজ্ঞরা এই রোগের নাম দিয়েছেন, ‘লাভ ব্রেন’।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে জানা যায়, চীনের সিচুয়ান প্রদেশের জিয়াওয়ু নামের এক তরুণী প্রতিদিন তাঁর প্রেমিককে ১০০ বার করে ফোন কল করতেন। সেইসঙ্গে একের পর এক মেসেজ পাঠাতেন। সাড়া না মিললে ঘরে ভাংচুরও চালাতেন। দিনের পর দিন এমন কর্মকাণ্ডে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করার পাশাপাশি প্রেমিকের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিলেন জিয়াওয়ু। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে পুলিশ ডাকেন প্রেমিক। পরবর্তীতে হাসপাতালে পাঠানো হয় প্রেমিকাকে।
চেংডুর দ্য ফোর্থ পিপলস হসপিটালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডু না জানিয়েছেন, ওই তরুণী দিনে সর্বোচ্চ ১০০ বার ফোন করেছিলেন প্রেমিককে। প্রেমিকের সঙ্গ না পেলে বা কথা বলতে না পারলে মানসিক চাপ সহ্য করতে পারতেন না। ঘরের যাবতীয় জিনিসপত্র ছুঁড়ে ফেলতেন। এমনকি আত্মহত্যার হুমকি দিলে পুলিশ ডাকেন প্রেমিক। জিয়াওয়ু এক ধরনের বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত, যাকে বলা হয় ‘লাভ ব্রেন’।
প্রেমিকের জন্য এমন মরিয়া হওয়া যোগাযোগের চেষ্টা একসময় মানসিক স্বাস্থ্যকে গভীরভাবে ক্ষতি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। বর্তমানে জিয়াওয়ুকে চিকিৎসকেরা বর্ডারলাইন পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা শুরু করেছেন। চিকিৎসক ডু জানান, এই ধরণের মানসিক অবস্থা তখনই তৈরি হয়, যদি শিশু বয়স থেকে কেউ ট্রমায় ভোগে। এতে মানসিক ভারসাম্যহীনতা বাড়তে পারে, যার জন্য বাড়তে পারে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা এবং বাইপোলার ডিসঅর্ডার।
এদিকে জাইউয়ের এই অবস্থা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও বেশ আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন, এই অবস্থায় আশপাশের মানুষের সাহায্য দরকার। উপসর্গ চরম হলে রোগীর চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে।