ইসরায়েলি হামলায় নিহত মায়ের পেটে অলৌকিকভাবে বেঁচে ছিলেন শিশু
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত গাজায় নির্মম, বর্বর, নৃশংস ও ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার রাফা শহরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় নিহত এক ফিলিস্তিনি মায়ের পেট থেকে জীবিত অবস্থায় এক মেয়েশিশুকে বের করা হয়েছে। শনিবার রাতে রাফায় ভয়াবহ হামলা চালায় ইসরায়েলিরা। ওই হামলায় ১৯ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুটি বাড়িতে চালানো হামলায় ওই ১৯ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ১৩ জনই শিশু। ভূমিষ্ঠ হওয়া ওই নবজাতকটি মোহাম্মদ সালামা নামের এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর ১ দশমিক ৪ কেজি ওজনের শিশুটিকে জরুরিভাবে সিজারের মাধ্যমে তার মায়ের পেট থেকে বের করা হয়। তার মা মৃত্যুর সময় ৩০ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
বর্তমানে শিশুটিকে রাফার একটি হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে। শিশুটির কোমরে বাধা একটি টেপে তার নাম হিসেবে লেখা রয়েছে ‘শহীদ সাবরিন আল-সাকানির সন্তান।’ মৃত মায়ের পেট থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটির বাবা ও বোনও এই হামলায় নিহত হয়েছে। ফলে এতিম অবস্থাতেই জন্ম হয়েছে তার।
শিশুটির চাচা জানিয়েছেন, হামলায় নিহত হওয়া তার বোন মালাক শিশুটির নাম রাখতে চেয়েছিল রুহ। যার বাংলা অর্থ আত্মা। তিনি বলেছেন, “পৃথিবীতে বোন আসছে, এজন্য খুবই খুশি ছিল মালাক।”
চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে তিন থেকে চার সপ্তাহ থাকবে শিশুটি। এরপর কোন আত্মীয়র কাছে সে যাবে সেটি দেখা হবে। যদিও এই শিশুটি বেঁচে গেছে, কিন্তু সময়ের আগে জন্ম হওয়ায় তার বেশকিছু সমস্যাও রয়েছে।
এত শিশু ও নারীর প্রাণহানির ব্যাপারে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তারা দাবি করেছে, রাফায় সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে রয়টার্স জানায়, মূলত হামলা হয়েছিল বেসামরিকদের ভবনের ওপর। এতে ১৩টি শিশু প্রাণ হারিয়েছে।