যে শর্তে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেবে মিয়ানমার সরকার
জাতিগত সহিংসতায় দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সংঘর্ষ চলছে। ইতোমধ্যে দেশটির রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল দখলের দাবি করেছে বিদ্রোহীরা। এদিকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করছে অনেকেই। এমতাবস্থায় মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের কথা বলে সেনাবাহিনীতে নিচ্ছে জান্তা সরকার। এ জন্য অনেক গ্রাম এবং ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা পুরুষদের ধরে আনা হচ্ছে।
গতকাল শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থাইল্যান্ড থেকে পরিচালিত দেশটির ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
রাখাইনের অধিকারকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দারাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, যেসব রোহিঙ্গা পুরুষ সেনাবাহিনীতে যোগ দেবেন তাদের এক বস্তা চাল, নাগরিকত্বের একটি পরিচয়পত্র এবং মাসিক ১ লাখ ১৫ হাজার কিয়াট বেতন দেওয়া হবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মির কাছে হারানো শহরগুলো পুনরায় নিজেদের দখলে নিতে রোহিঙ্গা পুরুষদের যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে। জান্তার পক্ষে যুদ্ধে যোগদানের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্প এবং গ্রাম থেকে ৪০০ রোহিঙ্গাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জান্তা বাহিনী ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকলের তালিকা তৈরির জন্য বুচিডং, মংডু এবং সিত্তের গ্রাম প্রশাসক ও নেতাদের চাপ দিয়েছে।এরমধ্যে ছোট গ্রাম থেকে অন্তত ৫০ জন, বড় গ্রাম ও প্রতিটি শরণার্থী ক্যাম্প থেকে অন্তত ১০০ জনের তালিকা দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ফ্রি রোহিঙ্গা কোয়ালিশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা নে সান বলেছেন, প্রশিক্ষণের সময় মাত্র দুই সপ্তাহ। যাদের দুই সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে তাদের জান্তা বাহিনী শুধুমাত্র মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি বুধবার পর্যন্ত সিত্তের শরণার্থী ক্যাম্প থেকে ৩০০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা এখন প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
এর আগে বুচিডং থেকে গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি শতাধিক মুসলিম রোহিঙ্গা পুরুষকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১০ ফেব্রুয়ারি ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সব নারী-পুরুষের সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা।