পাকিস্তানের বিমান হামলায় কান্দাহারে ঘরছাড়া ২০ হাজার পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
Online desk Online desk
প্রকাশিত: ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২২ PM

আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের সীমান্তবর্তী শহর স্পিন বোলদাকে পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ২০ হাজার আফগান পরিবার। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে আফগান গণমাধ্যম তোলো নিউজ।  

কান্দাহার প্রাদেশিক প্রশাসনের শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন বিভাগের উপপ্রধান নিয়ামতউল্লাহ ওলফাত তোলো নিউজকে জানান, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় নির্বিচারে বোমাবর্ষণ করেছে পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান। এতে হাজারো ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, বহু মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, ‘বাস্তুচ্যুতদের সহায়তার জন্য আমরা জরুরি সহায়তা কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্পিন বোলদাক শহরটি পাকিস্তান সীমান্তের একেবারে কাছে। ১১ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘাত ও পাল্টা হামলার পর ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়।

যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কান্দাহার ও পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। আফগান কর্মকর্তাদের দাবি, এসব হামলায় কান্দাহারে অন্তত ৫০ জন ও পাকতিকায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। হতাহতদের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার পেছনে রয়েছে তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) নামের নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী। পাকিস্তান সরকার দাবি করছে, আফগান তালেবান সরকারের আশ্রয় ও মদতে টিটিপি আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তবে কাবুল প্রশাসন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

৯ অক্টোবর কাবুলে বিমান হামলা চালিয়ে টিটিপির শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এর দু’দিন পর সীমান্তে তীব্র সংঘাত শুরু হয় দুই দেশের সেনাদের মধ্যে।

চার দিনের সংঘর্ষের পর ১৫ অক্টোবর থেকে দুই দিনের যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। যদিও সেটি শেষ হওয়ার পর নতুন করে হামলা শুরু হয়, সর্বশেষ খবর অনুযায়ী পাকিস্তান ও আফগানিস্তান আবারও যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে সম্মত হয়েছে।

আজ শনিবার থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধি দলের মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনা চলাকালীন সময় পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে দুই পক্ষই।