গাজা সিটি ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:২১ AM

গত ২৩ মাসের অধিক সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। সম্প্রতি গাজা সিটি দখলের লক্ষ্যে ভয়াবহ বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। যা চলমান যুদ্ধের দুই বছরে সবচেয়ে তীব্র বলে মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের দক্ষিউপকূলবর্তী আল-রাশিদ সড়ক ধরে দক্ষিণে চলে যেতে আহ্বান জানান ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিচায় আদরাই।

এ ছাড়াও শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) গাজা নগরীর বাসিন্দাদের সতর্ক করে তিনি বলেন, সেনারা নজিরবিহীন শক্তি ব্যবহার করবে। 

আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানান, গাজা নগরীতে পশ্চিম দিকে উপকূলের দিকে যেতে থাকা মানুষরা হামলার তীব্রতায় বিশ্রাম নেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছেন না। 

তিনি বলেন, এই অভিযান পুরো ব্লক ধ্বংস করে দিচ্ছে। অনেক পরিবার এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছে, বিশেষ করে তাল আল-হাওয়া এলাকায়।

শুক্রবার ভোর থেকে সারা গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু গাজা নগরীতেই নিহত ২৬ জন। তাল আল-হাওয়ায় একটি আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় তিনজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান।

এ ছাড়া দক্ষিণ গাজায় সাহায্য নিতে যাওয়া দু’জন নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার আল-আকসা শহীদ হাসপাতাল জানিয়েছে, শুক্রবার সেখানে অপুষ্টিজনিত কারণে ৯ বছর বয়সী এক শিশু মারা গেছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দুর্ভিক্ষে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৪৪১ জন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ফিলিস্তিনি দক্ষিণে যেতে চাইছেন, কিন্তু ভাড়া গাড়ি বা আসবাবপত্র নেওয়ার সামর্থ্য নেই। ফলে অনেকে পায়ে হেঁটে বা ছোট গাড়ি টেনে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার ৫০ বছর বয়সী নিভিন আহমেদ সাত সদস্যের পরিবার নিয়ে গাজা নগরী থেকে ১৫ কিলোমিটার হাঁটতে বাধ্য হন। 

তিনি বলেন, আমরা ক্লান্ত হয়ে হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়েছি। ছোট ছেলেটি ক্লান্তিতে কেঁদেছে। আমরা পালাক্রমে একটি ছোট গাড়ি টেনে নিয়েছি।

আল-জাজিরার তথ্যমতে, দক্ষিণের আল-মাওয়াসি এলাকায় অনেকে আশ্রয় নিলেও সেখানে আগেও হামলা হয়েছে, যদিও এটিকে ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আগস্টের শেষ দিক থেকে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ গাজা নগরী ছেড়েছে। তবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, এখনও প্রায় ৭ লাখ ৪০ হাজার মানুষ উত্তর গাজায় আটকে আছেন।