ভয়ংকর বোমা বানাল তুরস্ক

তুরস্ক তৈরি করেছে নিজেদের সবচেয়ে শক্তিশালী অ-পারমাণবিক বোমা ‘গাজাপ’। সোমবার এক সামরিক সরঞ্জাম প্রদর্শনীতে বোমাটি প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে আনা হয়। তুর্কি ভাষায় এর নাম ‘রাথ’।
প্রায় ৯৭০ কেজি (দুই হাজার পাউন্ড) ওজনের এই থার্মোবারিক বোমাটি উচ্চ বিভাজন ক্ষমতাসম্পন্ন। বিস্ফোরণের সময় এটি প্রায় ১০ হাজার ধাতব টুকরো ছড়িয়ে দিতে পারে এবং একযোগে তীব্র চাপ ও তাপ তরঙ্গ সৃষ্টি করে।
‘গাজাপ’ মূলত শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটি, ভূগর্ভস্থ টানেল, বাঙ্কার এবং ঘনবসতিপূর্ণ শহরাঞ্চলে যুদ্ধ পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) ইস্তাম্বুল ফেয়ার সেন্টারে শেষ হওয়া প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে ‘গাজাপ’ ও ‘হায়ালেট’ (ভূত) বোমা দুটি প্রথমবারের মতো প্রদর্শিত হয়েছে।
বোমাটি তৈরি করেছে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার’ (আরডিসি)। আরডিসির গবেষক দলের নেত্রী নিলুফার কুজুলু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘গাজাপ’ বোমাটি বর্তমানে প্রচলিত স্ট্যান্ডার্ড এমকে সিরিজ ঘরানার এবং এই ঘরানার যত বোমা বর্তমান পৃথিবীতে প্রচলিত আছে, সেগুলোর তুলনায় তিনগুণ বেশি শক্তিশালী।
এমকে সিরিজ ঘরানার অন্যান্য বোমার মতো গাজাপও এরিয়াল, অর্থাৎ বিমান থেকে নিক্ষেপযোগ্য বোমা। তবে সব যুদ্ধবিমান থেকে এই বোমা নিক্ষেপ করা যাবে না। শুধু এফ ১৬ এবং এফ ৪ ফ্যান্টম এয়ারক্রাফট যুদ্ধবিমান থেকেই ছোড়া যাবে গাজাপ।
আরডিসির তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ স্ট্যান্ডার্ড এমকে সিরিজের বোমায় ফ্র্যাগমেন্টেশন বা বিস্ফোরক উপাদান থাকে প্রতি মিটারে ৩দশমিক ২, আর গাজাপে প্রতি মিটারে বিস্ফোরক উপদানের অনুপাত ১০ দশমিক ১৩।
ফলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে সক্ষম গাজাপ। নিলুফার বলেছেন, গাজাপ যেখানে বিস্ফোরিত হবে। বিস্ফোরণের পর তার চারপাশের ১৬০ মিটার এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছাবে ৩ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই পরিমাণ তাপে ইস্পাত গলে যায়।
‘গাজাপের শক্তি ও ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা পারমাণবিক বোমার পরেই। অর্থাৎ বর্তমানে বিশ্বে পরমাণু বোমা ব্যতীত সবচেয়ে শক্তিশালী যেসব বোমা রয়েছে, গাজাপ সেসবের মধ্যে অন্যতম ও শীর্ষস্থানীয়’, সাংবাদিকদের বলেছেন নিলুফার।