ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতির ইস্যুতে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ২৮ জুলাই ২০২৫, ১১:৩৫ AM

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার আগামী সপ্তাহে একটি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এক সরকারি সূত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকের মূল এজেন্ডা হবে গাজা পরিস্থিতি ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়।

ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস প্রথমে এই তথ্য প্রকাশ করে জানায়, যদিও ব্রিটিশ মন্ত্রীরা বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে রয়েছেন এবং ছুটি শেষ হওয়ার কথা ১ সেপ্টেম্বর, তবে গাজা ইস্যুতে জরুরি আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কারণে তারা আগেই বৈঠকে বসতে পারেন।

স্টারমারের দফতর অবশ্য রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

এই পদক্ষেপ এমন সময়ে এলো, যখন স্টারমার শুক্রবার বলেছিলেন— শুধুমাত্র একটি আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবেই ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। কিন্তু এই অবস্থান লেবার পার্টির অনেক সদস্যকে হতাশ করেছে, কারণ তারা ফ্রান্সের মতো দ্রুত স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে।

এর আগে যুক্তরাজ্যের ২২০ জনের বেশি সংসদ সদস্য (এমপি), যাদের মধ্যে শাসক দল লেবার পার্টির অনেকেই আছেন, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

নয়টি ভিন্ন রাজনৈতিক দলের এমপিদের স্বাক্ষর করা একটি যৌথ চিঠিতে তারা বলেন, ‌‘আমরা আপনাকে অনুরোধ করছি আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিন।’

উল্লেখ্য, ২৮ ও ২৯ জুলাই জাতিসংঘের উদ্যোগে এই সম্মেলনটি ফ্রান্স ও সৌদি আরবের সহ-সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বুঝি, যুক্তরাজ্যের একার পক্ষে স্বাধীন ও মুক্ত ফিলিস্তিন গঠন সম্ভব নয়। তবে যুক্তরাজ্যের স্বীকৃতি একটি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দেবে বিশ্বকে।’

সেইসঙ্গে, ব্রিটেনের ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তারা বলেন, ‘১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা’র মাধ্যমে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠনে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল; এখন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়াও আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’

এ চিঠিতে কনজারভেটিভ, লিবারেল ডেমোক্র্যাট, স্কটিশ ওয়ানেশনাল পার্টি এবং ওয়েলসের প্লাইড কামরিসসহ বিভিন্ন দলের সংসদ সদস্যরা স্বাক্ষর করেন। এতে মধ্যপ্রাচ্যে টেকসই শান্তির পক্ষে যুক্তরাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জোরালো হয়েছে।

উল্লেখ্য, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির বিষয়টি নিয়ে স্টারমার ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক চাপে রয়েছেন, বিশেষ করে তার দলের অভ্যন্তর থেকেই। এই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার এই বৈঠককে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।