আশ্বাসের পর ঢামেকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা চালু

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪১ PM

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার আশ্বাসে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। আজ রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার পর চিকিৎসকদের জরুরি বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা দিতে দেখা যায়। এদিকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় হাসপাতালে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনীসহ বিপুল আনসার সদস্যকে। 

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে 'কমপ্লিট শাটডাউন' শুরুর পর বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নুরজাহান বেগমের সাথে আলোচনায় বসেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। পরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাসে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি স্থগিত হয়েছে।

তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, প্রত্যেক চিকিৎসকের জন্য একজন করে নিরাপত্তা কর্মী নিশ্চিত করার শর্তে শুধু জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা দেবেন তারা। বহির্বিভাগ ও রুটিন সেবা বন্ধ থাকবে। আগামী সাত দিন এভাবেই চলবে। এর মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার ও কর্মস্থলে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে আবারও কর্মসূচি দেওয়া হবে।

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা শুরুর বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আসাদুজ্জামান বলেন, ‘চিকিৎসকদের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। আশ্বাস পেয়ে সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করেছেন চিকিৎসকরা। ঢামেকে কমপ্লিট শাটডাউন এখন আর নেই। চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিচ্ছেন। প্রথমে জরুরি সেবা শুরু হবে। পরে অন্য বিভাগগুলোতে তারা যুক্ত হবেন।’ 

শনিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির (বিইউবিটি) শিক্ষার্থী আহসানুল হক দীপ্তর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রথম ঘটনার সূত্রপাত। অবহেলায় তার মৃত্যু হয় অভিযোগ তুলে দীপ্তর ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা ঢামেকে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে চিকিৎসকদের মারপিট করেন। এ সময় আহত হন নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ইমরান, মাশরাফি ও জুবায়ের।

এ ঘটনায় হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতিতে যান ঢাকা মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। একই দাবিতে সারাদেশে চিকিৎসা না দিতে কমপ্লিট কমপ্লিট শাট ডাউনের ঘোষণাও দেন তারা। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে দুর্ভোগে পড়েন শত শত রোগী।

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চার দফা দাবি হলো—

১. ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলায় অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

২. ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা মেডিকেলসহ দেশের সব জেলা উপজেলা ও বিভাগীয় হাসপাতালে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও অস্ত্রহাতে সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখতে হবে। 

৩. ভবিষ্যতে চিকিৎসক ও হাসপাতালের নিরাপত্তা দিতে ৭ দিনের মধ্যে স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ দিতে হবে।

 ৪. দ্রুত স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় এরই মধ্যে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে বিইউবিটির এক শিক্ষকসহ তিন শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে আরও ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে।