ফাইনালে আর্জেন্টিনা

২০০৭ সালের পর এবারই প্রথম অনূর্ধ্ব–২০ ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছিল ছয়বারের শিরোপাজয়ী আর্জেন্টিনা জাতীয় অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দল। সেই ধারা ধরে রেখে আরেক লাতিন দেশ কলম্বিয়া জাতীয় অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল দলকে হারিয়ে তারা পৌঁছে গেছে শিরোপা নির্ধারণী ফাইনালে। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন মাতেও সিলভেট্টি। এ ছাড়া লাল কার্ড দেখে শেষ ২০ মিনিট ১০ জন নিয়ে খেলতে হয় কলম্বিয়াকে।
বয়সভিত্তিক ফুটবলের সর্বোচ্চ এই আসরটি এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে চিলিতে। জুলিও মার্টিনেজ প্রাদানোস স্টেডিয়ামে আজ (বৃহস্পতিবার) দুই লাতিন শক্তির সেমিফাইনাল ছিল টানটান উত্তেজনায় ভরা। বল দখল ও আক্রমণে সমানতালে লড়েছে উভয় দল। কলম্বিয়া ৫৪ শতাংশ সময় বলের নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ১৩টি শটের মধ্যে ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনার ১৪ শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৫টি।
যুব বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ শিরোপাজয়ী আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে ফিরতে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ১৮ বছর। ২০০৭ সালে কানাডাতে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব–২০ বিশ্বকাপে ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের সময় দলে ছিলেন কুন আগুয়েরো, আনহেল ডি মারিয়া ও সার্জিও রোমেরো। এরপর টানা সাত আসরে তাদের সেরা সাফল্য ছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। উল্লেখযোগ্যভাবে, সেই ২০০৭ সালের দলের সদস্য ডি মারিয়াই পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পান।
আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়া ম্যাচের প্রথমার্ধে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ হলেও, কেউ গোলের দেখা পায়নি। ফলে ডেডলাইন ভাঙতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৭২ মিনিট পর্যন্ত। লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি সতীর্থ সিলভেট্টি কোয়ার্টারের পর সেমিতেও গোলের দেখা পেলেন। চলতি বিশ্বকাপে এ নিয়ে এটি তার চতুর্থ গোল। অন্যদিকে, হারের সঙ্গে কলম্বিয়ার সঙ্গী হয় ৭৯ মিনিটে মিডফিল্ডার জন এনটারিয়ার দুই হলুদ কার্ড মিলে দেখা লাল কার্ড। ১০ জনের কলম্বিয়া ১-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
আরেক সেমিফাইনালে আফ্রিকান দেশ মরক্কো ইউরোপীয় জায়ান্ট ফ্রান্সের সঙ্গে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতেছে। যেখানে নির্ধারিত সময়ে ১-১ সমতায় ছিল দুই দল। আত্মঘাতি গোলে ৩২ মিনিটে মরক্কোকে এগিয়ে দেন ফ্রান্সের লিসান্দ্রো ওলমেটা। লুকাস মিচেলের গোলে ফরাসি যুবারা ৫৯ মিনিটে সমতায় ফেরে। ৯০ মিনিট পর্যন্ত বাকি সময়ে আর কেউ গোল না পাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানে স্কোরশিট অপরিবর্তিত থাকার পর রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জিতেছে মরক্কো।
সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বফুটবলে চমক হিসেবে আবির্ভূত হওয়া মরক্কো এবারই প্রথম যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল। এর আগে সিনিয়র দলের ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে তারা পরাশক্তি কয়েকটি দেশকে বিদায় করে সেমিফাইনালও খেলেছিল। যা ছিল আফ্রিকা মহাদেশের প্রথম কোনো দেশের শেষ চারে খেলার কীর্তি। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়েও সবার আগে উত্তীর্ণ হয়ে মূলপর্বে জায়গা করে নিয়েছে হাকিমি-দিয়াজ-বুনোরা। তাদের উত্তরসূরী অনূর্ধ্ব-২০ মরক্কো দল আগামী সোমবার ফাইনালে আর্জেন্টাইন যুবাদের বিপক্ষে লড়বে।