আর্জেন্টিনার ফুটবল ইতিহাসে জন্ম নিল কালো অধ্যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস জার্নাল স্পোর্টস জার্নাল
প্রকাশিত: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:৩৭ AM

আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে অনুষ্ঠিত কোপা সুদামেরিকানার শেষ ষোলোর ম্যাচে চিলির ইউনিভার্সিদাদ দে চিলে ও স্বাগতিক ক্লাব ইন্ডিপেনডিয়েন্তের খেলার মাঝেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দর্শকরা। রক্তক্ষয়ী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কঠোর অবস্থান নেয়। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি বাতিল করা হয় এবং আহত ১৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া শতাধিক সমর্থককে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ তুলেছে চিলির ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউনিভার্সিদাদ দে চিলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে– তাদের সমর্থকদের ওপর ইন্ডিপেনডিয়েন্তের দর্শক ও স্থানীয় পুলিশ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। এই রাত ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সহিংস অধ্যায় হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৯ সমর্থকের মধ্যে ১৬ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। আরেকজন মস্তিষ্কে আঘাত নিয়ে আইসিইউতে নেওয়ার পর তার অবস্থা এখন কিছুটা ভালো।

সহিংসতার ঘটনায় ম্যাচটি মাঝপথেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বিরতির সময় চিলিয়ান সমর্থকরা নিচের গ্যালারিতে থাকা স্বাগতিক সমর্থকদের দিকে বিভিন্ন বস্তু, এমনকি একটি স্টান গ্রেনেড পর্যন্ত নিক্ষেপ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ইন্ডিপেনডিয়েন্তে সমর্থকরা অবাধে চিলিয়ান সমর্থকদের গ্যালারিতে প্রবেশ করে ইউনিভার্সিদাদ দে চিলের সমর্থকদের উপর হামলা চালালে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে পালাতে বাধ্য হন চিলিয়ান সমর্থকরা।

বিবৃতিতে চিলির ক্লাবটি জানায়, ইন্ডিপেনডিয়েন্তের সমর্থকরা অবাধে আমাদের গ্যালারিতে প্রবেশ করে চরম সহিংস ও অমানবিক হামলা চালায়। তাদের ভয়াবহ নৃশংসতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। স্বাগতিক সমর্থকরা চিলির খেলোয়াড়দের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে ড্রেসিংরুমেও ঢোকার চেষ্টা করেছিল এবং তাদের টিম বাসের জানালা ভাঙচুর করা হয়। এমনকি প্রায় ১০০ চিলিয়ান সমর্থককে আটক করলেও স্বাগতিক দলের কোনো হামলাকারীকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেনি।

অন্যদিকে, চিলির ক্লাবটির অভিযোগ অস্বীকার করে আর্জেন্টাইন ক্লাব ইন্ডিপেনডিয়েন্তে জানিয়েছে, ম্যাচ শুরুর আগেই সফরকারী সমর্থকরা ঝামেলা শুরু করে এবং স্টেডিয়ামের সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট করে দেয়। তারা টয়লেট ভাঙচুর করে এবং স্বাগতিক সমর্থকদের দিকে আতশবাজি নিক্ষেপ করে, যার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় অগ্রহণযোগ্য সংঘর্ষের জন্ম হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা সফরকারী সমর্থকদের মাত্রাতিরিক্ত সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট ছিল না।

সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের আহবান জানিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, ‘ফুটবলে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। খেলোয়াড়, সমর্থক, কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট কর্মীসহ যে কেউ সুন্দর এই খেলাটি উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য ভয়মুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। সব নিরপরাধ ও ভুক্তভোগীদের প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বর্বরোচিত ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনবে।’