ইসরায়েলের বিপক্ষে ম্যাচের আয়ের অর্থ যাবে গাজায়

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি শিশু ও বেসামরিক মানুষের ওপর লাগাতার হামলার প্রতিবাদে দখলদার ইসরায়েলের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনা ক্রীড়াঙ্গনে আগেও দেখা গেছে। তবে নরওয়ে সকার ফেডারেশন সেই পথে হাঁটেনি। ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তাদের ম্যাচ রয়েছে ইসরায়েলের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ গাজার মানবিক সহায়তা প্রকল্পে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে আর্লিং হালান্ডের দেশ নরওয়ে।
ইউরোপীয় দেশটি আগামী ১১ অক্টোবর ওসলোতে ইসরায়েলকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে আতিথ্য দেবে। সেই ম্যাচকে কেন্দ্র করে নরওয়েজিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি লিসে ক্ল্যাভনেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘আমরা কিংবা অন্য কোনো সংস্থাই দীর্ঘ সময় ধরে গাজায় বেসামরিক মানুষের ওপর চলমান অকল্পনীয় হামলা ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উদাসীন থাকতে পারে না।’
‘গাজায় প্রতিদিন জীবন বাঁচানোর জন্য নিয়োজিত মানবিক সহায়তা সংস্থার কাজ এগিয়ে নিতে আমরা অনুদান পাঠাতে চাই। যেন তাদের জরুরি সহায়তা কার্যক্রম আরও বেগবান করা যায়’, আরও যোগ করেন লিসে ক্ল্যাভনেস। আগামী সপ্তাহে নরওয়ে-ইসরায়েলের বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। টিকিট বিক্রি থেকে নরওয়ের ফুটবল ফেডারেশন কী পরিমাণ অর্থ আয় করতে চায় সেটি অবশ্য তারা সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেনি।
নরওয়ের এমন সিদ্ধান্তের বিপরীতে গতকাল (বুধবার) ইসরায়েলি ফুটবল ফেডারেশন দেশটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ও নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনায় নিন্দা জানায়। ব্রিটিশ দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি ফেডারেশন জানায়, নরওয়েজীয়দের প্রতি আহ্বান তাদের অর্থ যেন কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন বা তিমি শিকার কার্যক্রমে ব্যয় না হয়, সেটি যেন তারা নিশ্চিত করে।’ নইলে নরওয়ে বৈশ্বিক সমালোচনার মুখে পড়বে বলেও উল্লেখ করেছে ইসরায়েল।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসরায়েল বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় নিজেদের দেশে ম্যাচ আয়োজন করতে পারছে না। অবশ্য তাদের খেলার ওপর ফিফা ও উয়েফার পক্ষ থেকে যেন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় সেই দাবিও রয়েছে। নরওয়ের বিপক্ষে নিজেদের ‘হোম’ বাছাইপর্বের ম্যাচ হাঙ্গেরিতে খেলেছিল ইসরায়েল। সেই ম্যাচে নরওয়ে ৪-২ গোলে জয় পায়। বর্তমানে পাঁচ দল নিয়ে গঠিত বাছাইপর্বের গ্রুপটিতে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে, আর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ইসরায়েল।
এদিকে, নরওয়ে ফুটবল ফেডারেশন জানিয়েছে, তারা উয়েফা এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে ১১ অক্টোবরের ম্যাচ ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে প্রায় ৩ হাজার টিকিট কম দেওয়া হতে পারে। সাধারণত ম্যাচটির ভেন্যু উলেভাল স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের খেলায় প্রায় ২৬ হাজার দর্শক সমাগম হয়।