রিয়ালকে লজ্জায় ডুবিয়ে ফাইনালে পিএসজি

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্পোর্টস জার্নাল স্পোর্টস জার্নাল
প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৪ AM

সদ্য সমাপ্ত মৌসুমটা একেবারেই প্রত্যাশামতো কাটেনি রিয়াল মাদ্রিদের। কোনো শিরোপা না পাওয়ায় দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে। ক্লাব বিশ্বকাপে শেষ ভরসা ছিল লস ব্লাঙ্কোসদের, তবে সেখানেও থেমে যেতে হয়েছে সেমিফাইনালে।

নতুন কোচ জাভি আলোনসোর অধীনে টুর্নামেন্টে ভালো সূচনা করলেও ফ্রান্সের ক্লাব পিএসজির বিপক্ষে সেমিফাইনালে দাঁড়াতেই পারেনি রিয়াল। ইউরোপ চ্যাম্পিয়নরা দেখিয়েছে একচেটিয়া আধিপত্য, আর দুর্বল রক্ষণভাগের কারণে বড় ব্যবধানে হেরে যায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

বুধবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাতে মেটলাইফ স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরুতেই থিবো কোর্তোয়া দুইটি অসাধারণ সেভ করলেও, অ্যাসেনসিও ও রুডিগারের ভুলে মাত্র ২৪ মিনিটেই তিন গোল হজম করে বসে রিয়াল। পরে গন্সালো রামোসের গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৪-০। হতাশাজনক এই পরাজয়ের মাধ্যমে মৌসুম শেষ হলো শিরোপাহীনভাবেই—ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটির জন্য যা নিঃসন্দেহে হতাশার।

এদিন প্রথম চার মিনিটে দুটি দুর্দান্ত সেভ করেন থিবো কোর্তোয়া। কিন্তু তার ডিফেন্ডারদের নিদারুণ ব্যর্থতায় পরের পাঁচ মিনিটে জোড়া গোল করে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি।

নিজেদের পেনাল্টি স্পটের কাছে বল পেয়ে ঠিকঠাক ক্লিয়ার করতে পারেননি রাউল আসেন্সিও। বল কেড়ে নিয়ে এগিয়ে যান দেম্বেল। ছুটে গিয়ে তাকে কড়া ট্যাকল করে বসেন কোর্তোয়া। বলের নাগাল পাননি বেলজিয়ান গোলরক্ষক, সেটি পেয়ে যান রুইস। অরক্ষিত স্প্যানিশ মিডফিল্ডার অনায়াসে খুঁজে নেন ফাঁকা জাল।

ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই আরেক সেন্টার-ব্যাক আন্টোনিও রুডিগারের মারাত্মক ভুলে আবারও পিছিয়ে পড়ে রিয়াল। নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে শট নিতে পারেননি জার্মান ডিফেন্ডার। পেছন থেকে ছুটে গিয়ে বল নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আড়াআড়ি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দেম্বেলে।

২৪তম মিনিটে তাদের যেন শোকের সাগরে ডুবান রুইস। ‘ওয়ান টাচ’ আক্রমণের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে রিয়ালের রক্ষণকে পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলে পিএসজি। পেনাল্টি স্পটের কাছে আশরাফ হাকিমির চমৎকার পাস পেয়ে, ফেদে ভালভের্দের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে ঠাণ্ডা মাথায় নিজের দ্বিতীয় ও দলের তৃতীয় গোলটি করেন রুইস।

এরপর পিএসজির একের পর এক আক্রমণ সামলাতে দিশেহারা হয়ে পড়ে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তবে কোনো গোল না হওয়ায় ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ফরাসি জায়ান্টরা।

দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি ভিনি-বেলিংহ্যামরা। ৫৭তম মিনিটে দেম্বেলে ও কাভারাৎস্খেলিয়াকে তুলে নেন পিএসজি কোচ। আর ৬১তম মিনিটে জুড বেলিংহ্যামের জায়গায় লুকা মদ্রিচকে নামান রিয়াল কোচ আলোনসো।

ফাইনালের কথা মাথায় রেখে দ্বিতীয়ার্ধে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের তুলে নেন পিএসজি কোচ। বিরতির পর বেশ উন্নতি করলে রিয়াল গোলের তেমন নিশ্চিত কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি। ৭০তম মিনিটে মাঠে আসেন রিয়ালের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার দানি কার্ভাহাল। গত অক্টোবরের পর এই প্রথম খেলতে নামলেন স্প্যানিশ রাইট-ব্যাক।

৮৮তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়ান রামোস। খুব কাছ থেকে গতিময় শটে জাল খুঁজে নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। গোল উদযাপনে তিনি স্মরণ করেন মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো জাতীয় দলের সতীর্ধ দিয়োগো জোটাকে। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলের বড় জয় নিয়ে মাঠে ছেড়েছে পিএসজি।