কন্যাসন্তানদের নায়িকা হতে দিতে চাইছেন না শিল্পীরা: মৌসুমীর আক্ষেপ
ঢাকাই চলচ্চিত্রের এমসময়ের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও ‘প্রিয়দর্শিনী’ খ্যাত চিত্রনায়িকা মৌসুমী। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে একাধিকবার তার হাতে উঠেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মোহনীয় রূপ ও অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে কোটি কোটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনাও করেছেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। স্টেজ শো’র পাশাপাশি সেখানেই নতুন সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। ‘অর্ধাঙ্গিনী’ শিরোনামের এই সিনেমায় তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন অভিনেতা তরিকুল ইসলাম মিঠু।
সম্প্রতি এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আক্ষেপ প্রকাশ করে চিত্রনায়িকা মৌসুমী জানান, হলিউড-বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সন্তানদেরকে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে দেখা যায়। তবে বাংলাদেশে এই চিত্রটা একেবারেই ভিন্ন। শাবানা, ববিতা, কবরী থেকে শুরু করে জসিম, ফারুক, আলমগীরদের মতো তারকাদের তুমুল জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও এ পথে পা বাড়াননি তাদের সন্তানেরা।
এ বিষয়ে মৌসুমী বলেন, ছেলেসন্তানদের ক্ষেত্রে বাধা না থাকলেও কন্যাসন্তানদের নায়িকা হতে দিতে চাইছেন না শিল্পীরা। সব নায়ক-নায়িকাকে দেখি তাদের ছেলেরা যদি সিনেমা করতে চায়, তাদেরকে না করেন না। কিন্তু মেয়ে কখনো যদি নায়িকা হতে চায়, সেটা নিয়ে সবাই একটু অমত পোষণ করেন।
‘ভাত দে’ সিনেমায় অভিনয় করে নজর কেড়েছিলেন চিত্রনায়ক আলমগীরের মেয়ে সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর। যদিও বর্তমানে গানে নিয়মিত তিনি। এ প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, আঁখি আলমগীর খুব সম্ভাবনাময় ছিল। তাকে কিন্তু ভাইয়া (আলমগীর) কাজ করতে দেননি। ও খুবই সুন্দর মিষ্টি দেখতে ছিল। সে সময় একঝাঁক নতুন মুখ আসছিল। কিন্তু আঁখিকে দেওয়া হয়নি। তাকে পেলে আমরা খুব ভালো একজন নায়িকা পেতাম। চম্পা আপার মেয়েও কিন্তু অনেক কিউট। চম্পা আপা তাকে কখনো নায়িকা হতে উৎসাহ দেননি। দেখা যায় যে, আমাদের অনেকেরই মেয়ে আছে, যাদের আগ্রহ থাকার পরও সিনেমায় আসতে দেওয়া হয়নি। অন্যভাবে বড় করা হয়েছে। কেন যেন আর্টিস্ট হওয়ার ব্যাপারে সবার বাধা।
চিত্রনায়িকা দীঘি প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিলেন দোয়েল আপা, তিনি অনেক সময় দিতেন দীঘিকে (প্রার্থনা ফারদিন দীঘি)। আপা আমাকে বলেছিলেন, আমার খুব ইচ্ছা দীঘিকে নায়িকা হিসেবে তৈরি করার। আমি নিজে যা মেইনটেইন করতে পারিনি। আমি বড় জায়গায় যেতে পারতাম। এত সাপোর্ট পেয়েও আমি আমার জায়গাটা ধরে রাখতে পারিনি। এটা আমি দীঘির মধ্যে দেখতে চাই।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মৌসুমী বলেন, সে সময় আপাকে আমি প্রশ্ন করলাম, দীঘির পড়াশোনার ক্ষতি হবে না? তখন তিনি বললেন, উঠতি বয়সে তাকে একটা ব্রেক দেব, গ্যাপ দেব। তারপর আবার যখন ফিরবে তখন নায়িকা হয়ে ফিরবে। তাকে একদম তৈরি করে ফেরাব। আমার খুব ভালো লেগেছিল এটা শুনে। একটা মেয়ে বাচ্চাকে নিয়ে যখন এমন প্ল্যান করা হয়, তাকে একদম ছেড়ে না দিয়ে, তার সঙ্গে সাপোর্টিভ হয়ে যদি একটা কিছু করা যায়, অবশ্যই ভালো রেজাল্ট আসে।