নিষেধাজ্ঞা থাকলেও যথেচ্ছভাবে ব্যবহার হচ্ছে প্লাস্টিকে মোড়ানো পোস্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০২:৩৫ PM

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছে প্রার্থীরা। তবে ভোটের পোস্টারে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও শীতের মধ্যে শিশির থেকে বাঁচাতে সারা দেশেই নির্বাচনী পোস্টারে পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা দিয়েই খালাস। প্লাস্টিকে মোড়ানো পোস্টারের কারণে কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো খবর এখনও মেলেনি। 

প্লাস্টিক মোড়া এসব পোস্টার পরিবেশের ক্ষতি করছে। এসব পোস্টার নিষ্কাশন নালায় গেলে সমস্যা আরও প্রকট হবে। সে কারণে পোস্টার ব্যবহারের ক্ষেত্রে আইনের আরও কঠোর প্রয়োগ চাইছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রায় সব প্রার্থীর পোস্টারই প্লাস্টিকে মোড়ানো। তবে ঢাকায় আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রার্থীর পোস্টারে প্লাস্টিকের ব্যবহার কম দেখা গেছে।

সেগুনবাগিচা এলাকায় ঢাকা-৮ আসনে নৌকার প্রার্থী আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের যেসব পোস্টার সাঁটানো হয়েছে, সেগুলো প্লাস্টিকে মোড়া। একই আসনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী ডা. এসএম সরওয়ারের পোস্টারও প্লাস্টিকে মোড়ানো। সেগুনবাগিচা এলাকায় ঝুলতে দেখা গেছে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী এম এ ইউসুফের প্লাস্টিক মোড়ানো পোস্টার।

তেজগাঁওয়ের নাবিস্কো এলাকায় ঢাকা-১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুজ্জামান খান কামালের যেসব পোস্টার দেখা গেছে, সেগুলোও প্লাস্টিকে মোড়ানো। তবে অনেক জায়গায় তার পোস্টারে প্লাস্টিক ব্যবহার হয়নি।

ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদের নির্বাচনি পোস্টার ঝোলানো হয়েছে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে। ওই আসনে অন্যান্য প্রার্থীদের যে পোস্টার দেখা গেছে তাদের বেশিরভাগ পোস্টারই প্লাস্টিকে মোড়ানো।

কচুক্ষেত এলাকায় ঢাকা-১৫ আসনে জাসদের প্রার্থী মুহাম্মদ শামছুল ইসলামের মশাল প্রতীকের পোস্টার, জাতীয় পার্টির সামছুল হকের লাঙ্গল প্রতীকের পোস্টারগুলো লেমিনেট করা।

ঢাকা-১৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আরাফাত আশওয়াদ ইসলামের প্রতীক বেলুন। এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে এ প্রার্থীর সব পোস্টার প্লাস্টিকে মোড়ানো।

আদাবরের বাসিন্দা কাজী মাহমুদুর রহমান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগে নির্বাচনের প্রচারে পোস্টারের ব্যবহারই বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

“এসব পোস্টার মারাত্মক দৃষ্টিদূষণ করে। পাশাপাশি এসব পোস্টারের একটা অংশ ড্রেনেজ সিস্টেমে চলে যাবে, বৃষ্টির সময় এর কুফল আমরা পাব। আধুনিক এই যুগে এ ধরনের পোস্টারের কোনো দরকারই নেই। বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রার্থীরা সহজেই তাদের প্রচার চালাতে পারেন। সিটি করপোরেশন জায়গা নির্ধারণ করে দিতে পারে বিজ্ঞাপনের বোর্ডের জন্য। এখন যেভাবে চলছে সেটা স্মার্ট বাংলাদেশ না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদ বলেন, “আমি যেসব পোস্টার বানিয়েছি সেগুলোতে কোনো প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়নি। কিন্তু আমার শুভানুধ্যায়ীদের কেউ কেউ পোস্টার করে দিয়েছেন, তারাই লেমিনেটেড পোস্টার বানিয়েছেন। কেউ কেউ তো রঙিন পোস্টারও করেছিল, পরে আমি সেগুলো সরিয়ে নিতে বলেছি।”

ঢাকা-৮ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাহাউদ্দিন নাছিমও দায় চাপিয়েছেন ‘অতি উৎসাহীদের’ ওপর; বলেছেন এসব কাজকর্মে তিনি ‘বিব্রত’।

নাছিম বলেন, তিনি যে পোস্টার করেছেন, সেগুলো লেমিনেট করা হয়নি। তিনি বলেন, “আমি সব সময় আচরণবিধি মেনে চলার কথা বলি। কিন্তু অতি উৎসাহীরা ছবি দিয়ে এসব পোস্টার, ব্যানার বানিয়ে বিভিন্ন জায়গায় টানাচ্ছে। আমাকে খুবই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে। এখন ইলেকশন রেখে লোক নিয়োগ করতে হচ্ছে সেসব পোস্টার সরানোর জন্য।”