এনবিআর কর্মকর্তা মিতুর বিরুদ্ধে মিলল ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০৯ AM

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের আওতাধীন কর অঞ্চল–৫ এর বরখাস্তকৃত সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুর কোটি টাকার ঘুষ চুক্তির প্রমাণ পেয়েছে।

দুদকের তথ্যানুসারে, এসএ গ্রুপের কর্ণধার ও এসএ পরিবহনের মালিক সালাহ উদ্দিন আহমেদ ১২ করবর্ষের আয়কর ফাইল সাজিয়ে ২৩৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার আয়ে বড় অঙ্কের করফাঁকি দিতে মিতুর সঙ্গে ঘুষের চুক্তি করেন। তাঁর আয়কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকার ওই চুক্তির অংশ হিসেবে জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুকে ৩৮ লাখ টাকা প্রদান করেন।

ঘুষের বিনিময়ে মিতু ১২ করবর্ষের আয়কর রিটার্নসহ বেশ কিছু স্পর্শকাতর নথি ওবায়দুল হকের হাতে তুলে দেন বলে দুদক জানিয়েছে।

রোববার (৫ অক্টোবর) দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম কর অঞ্চল–৫, ঢাকায় অভিযান চালিয়ে এ ঘুষ লেনদেনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় বলে এক সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

দুদক জানায়, কর অঞ্চল-৫, ঢাকার অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিধিবহির্ভূতভাবে আয়কর নথির সম্পদ বিবরণীতে সম্পদ সংযোজন করে রাষ্ট্রীয় রাজস্বের ক্ষতিসাধনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিতে সাময়িক বরখাস্ত করা একজন সহকারী কর কমিশনারের ৩৮ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে আয়কর দাতার পুরোনো আয়কর রিটার্ন এবং অন্যান্য দলিল হস্তান্তর সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে অভিযোগের সত্যতা রয়েছে বলে টিমের কাছে প্রতীয়মান হয়। রেকর্ডপত্র বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, কর অঞ্চল-৫ এর সহকারী কর কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিতুর সঙ্গে ১ কোটি টাকার চু্ক্তি হয়েছিল সালাহ উদ্দিন আহমেদের আইনজীবীর। বিনিময়ে ১২ কর বর্ষের কর ফাইল সম্পূর্ণ করে সাজিয়ে ২৩৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার আয় যোগ করা হয়েছিল। তাও আবার করমুক্ত সেবা খাতে। অথচ ব্যবসায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদ দিনের পর দিন কর ফাঁকি দিয়ে আসছিলেন। এমনকি তিনি আপিল, ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টে গিয়ে নিজের পক্ষে রায় পাননি। এরপরই আয়কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকার নতুন ফন্দি আঁটেন। সার্কেল কর্মকর্তার সঙ্গে কোটি টাকার ঘুষের চুক্তি করে বাড়তি সুবিধা হাতিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সে অনুযায়ী ঘুষের ৩৮ লাখ টাকা পরিশোধও করেন। বিনিময়ে সার্কেল থেকে পুরো ফাইল নিজের চেম্বারে নিয়ে ১২ বর্ষের পুরোনো রিটার্ন পরিবর্তন করেন। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিটের তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ১ সেপ্টেম্বর মিতুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে করদাতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ এবং আয়কর আইনজীবী ওবায়দুল হক সরকারের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।