সিগারেট খেতে নিষেধ করায় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার তাণ্ডব

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৮ AM

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তবে গত এক বছরে দেশব্যাপী ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে বিএনপি ও তাদের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, লুটপাট থেকে শুরু করে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। এবার দলটির এক নেতা তাণ্ডব চালাল মালিবাগে। রাজধানীর সোহাগ পরিবহনের মালিবাগ কাউন্টারের সামনে সিগারেট খাওয়া নিষেধ করাকে কেন্দ্র করে বাস কাউন্টারে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে কাউন্টারের ১৪ থেকে ১৫ কর্মচারীসহ সোহাগ পরিবহনের মালিক আলী হাসান তালুকদার পলাশ নিজেও আহত হয়েছেন।

সন্ত্রাসীরা আলী হাসান তালুকদার পলাশের বাসায়ও হামলা করেছে। হামলা ঠেকাতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্রের কোপে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন পলাশের ড্রাইভার মাসুদ। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোহাগ পরিবহনের মালিক পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লালের নেতৃত্বে ৬০ থেকে ৭০ জন এসে মব তৈরি করে অতর্কিত হামলা চালায়। কাউন্টারে ভাংচুরের পাশাপাশি নিরীহ যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে মারধর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বাস কাউন্টারের একাধিক কর্মী জানান, রাত ১১ টার দিকে দুই যুবক সোহাগ পরিবহনের মালিবাগ কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলেন। এ সময় কাউন্টার কর্তৃপক্ষ তাদের দূরে গিয়ে ধূমপান করতে বললে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।

পরবর্তীতে ওই দুই যুবক কিছুক্ষণ পর ৬০ থেকে ৭০ জনের একটি দল নিয়ে স্লোগান দিতে দিতে কাউন্টারে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এতে কাউন্টারের কাচ ও আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হামলার সময় আতঙ্কে আশপাশের সাধারণ মানুষ দৌড়ে সরে যায়।

আলী হাসান পলাশ তালুকদারের ভাই মাজেদুল হক নাদিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রমনা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বিল্লালের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়েছে।

মাজেদুল হক নাদিম বলেন, “পলাশ ভাইকে আক্রমণ করে গাড়ি ভাঙচুর করে। বাসার গেটেও হামলা করেছে। তবে ভেতরে ঢুকতে পারেনি। পলাশ ভাইয়ের গাড়ির ড্রাইভারের শরীরেও অসংখ্য কোপ লেগেছে।”

তিনি বলেন,“ হামলার কারণ জানি না, আকস্মিকভাবে সবকিছু ঘটে গেলো।”

রমনা মডেল থানার ডিউটি অফিসার এআই আশরাফুল ইসলাম জানান, জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেছে। সেখানে ওসি তদন্ত, ডিউটিরত এসআই ও উর্ধ্বতনরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন।

ঘটনাস্থল থেকে রমনা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. নাহিদ জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ৬০ থেকে ৭০ জন লোক কাউন্টারে এসে এলোপাথারি মারপিট করেছে। কাউন্টার ভাঙচুর করে স্টাফদের মেরেছে। সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের কোপে দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়া আরও অনেকে আহত হয়েছেন। কারা হামলা করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, আহতরা সিরাজুল ইসলাম মেডিকেলসহ স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হামলার নেপথ্যের কারণ ও ভিডিও ফুটেজ ধরে হামলাকারীদের সনাক্তের চেষ্টা চলছে।