এশিয়ার সেরা ভারত
-1290846.jpg?v=1.1)
ভারতকে যেকোনো ফরম্যাটে সর্বশেষ হার দেখিয়েছিল পাকিস্তান ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে। এরপর থেকে টানা আট ম্যাচে জয়ী দল কেবল ভারতই। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েও সেই জয়খরা কাটাতে পারেনি সালমান আলি আগার শিষ্যরা। শেষ ওভারের রোমাঞ্চে ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে নবমবারের মতো এশিয়ার সেরা হলো ভারত।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সপ্তদশ এশিয়া কাপের ফাইনালে উড়ন্ত সূচনা করেছিল পাকিস্তান। ১১.২ ওভারে দলীয় সংগ্রহ শতক ছোঁয় তারা। তবে পরের ধাপে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায় ইনিংস। জবাবে তিলক ভার্মার দায়িত্বশীল অর্ধশতকে ভর করে ২ বল হাতে রেখেই জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অভিষেক শর্মাকে (৫) দলীয় ৭ রানে ফেরান ফাহিম আশরাফ। স্লো ডেলিভারিতে মেরে খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন হারিস রউফের হাতে। পরের ওভারে শাহিন আফ্রিদির স্লো বলে তুলে মারার চেষ্টায় ঠিকঠাক লাগেনি সূর্যকুমার যাদবের (১) ব্যাটে। মিড অফে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন সালমান আগা।
সূর্য ব্যাট হাতে ধুঁকছিলেন চলতি বছর, সেই অফফর্ম এবারের এশিয়া কাপেও চালু রেখেছেন। ফাইনালসহ এই বছর ১১ ম্যাচে ভারতীয় অধিনায়কের রান মাত্র ১০০। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ফাহিম ভারতীয় শিবিরে আবারও ধাক্কা দেন শুভমান গিলকে (১২) ফিরিয়ে। মিড অনে তার ক্যাটিও নেন রউফ। ৪ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত বিপদে পড়ে। পাওয়ার প্লের ষষ্ঠ ওভারে ফাহিমকে চার-ছক্কায় ১১ রান নিয়ে সেই পরিস্থিতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠেন তিলক ভার্মা।
আবরার আহমেদের করা নবম ওভারে ডিপ মিডে ক্যাচ তুলেছিলেন সঞ্জু স্যামসন। কিন্তু ব্যক্তিগত ১২ রানে থাকা এই ব্যাটারের একেবারে সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করে বসেন হুসাইন তালাত। সেটাই বিপদের তিরটা পাকিস্তানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। এরপর তিলক-স্যামসন মিলে গড়েম বোঝাপড়ার জুটি। রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেছেন, সুযোগমতো হাঁকিয়েছেন বাউন্ডারি। ৫৭ রানে সেই জুটি ভেঙেছেন আবরার, ব্যক্তিগত ২৪ রানে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন স্যামসন।
ভারতের ওপর প্রয়োজনীয় রানরেটের চাপ বাড়ছিল। রউফের করা ১৫তম ওভারে ২ চার ও এক ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে তা থেকে কিছুটা মুক্তি দিয়েছেন তিলক। ৪১ বলে ব্যক্তিগত ফিফটিও পেয়ে যান এই বাঁহাতি ব্যাটার। পরের ওভারে আবরার ১১ রান দিলে ৪ ওভারে ভারতের আর ৩৬ রান প্রয়োজন হয়। শেষদিকে রোমাঞ্চ ছড়ায় দুবের আউটে। তবে তিলকের সঙ্গে তার ৬০ রানের জুটি ভারতের কাজটা সহজ করে ফেলেছিল। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ১০ রানের। চার-ছক্কায় তিলক ২ বল হাতে রেখেই ভারতের জয় নিশ্চিত করলেন।
ভারতের পক্ষে তিলক ৫৩ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৬৯ এবং শিভাম দুবে ২২ বলে ৩৩ রান করেন। বিপরীতে পাকিস্তানের হয়ে ফাহিম আশরাফ সর্বোচ্চ ৩ এবং শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮৪ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন পাকিস্তানের দুই ওপেনার শাহিবজাদা ফারহান ও ফখর জামান। ফারহান ৩৮ বলে ৫৭ রান করেন। ফখর ৩৫ বলে ৪৬ এবং সাইম আইয়ুব ১৪ রানে ফিরলে দলের আর কেউই দুই অঙ্কের ঘর ছুঁতে পারেননি। শেষ ২০ রান যোগ করতে পাকিস্তান হারিয়েছে ৭ উইকেট। ফলে ১৯.১ ওভারেই তাদের ইনিংস থামে ১৪৬ রানে। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন কুলদীপ যাদব। এ ছাড়া জাসপ্রিত বুমরাহ, বরুণ চক্রবর্তী ও অক্ষর প্যাটেল ২টি করে শিকার ধরেন।