যুদ্ধের প্রেক্ষাপট নিয়ে মন্তব্যের পর ক্ষমা চাইলেন রিশাদ

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) মাধ্যমে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অভিষেক হয় রিশাদ হোসেনের। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে নিজের প্রথম মৌসুমেই দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে নজর কাড়েন তিনি—মাত্র পাঁচ ম্যাচে তুলে নেন ৯ উইকেট। তবে মাঠের এই সফলতার বিপরীতে তার একটি সাম্প্রতিক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার কারণে হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় পিএসএল। এরপর দুবাই হয়ে বাংলাদেশে ফেরেন রিশাদ। দুবাইয়ে পৌঁছেই এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। উদাহরণ হিসেবে ড্যারিল মিচেল ও টম কারেনের নাম উল্লেখ করে বলেন, মিচেল নাকি তাকে জানিয়েছিলেন, আর কখনো পাকিস্তানে খেলতে আসবেন না, আর কারেন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন—যাকে একাধিক সতীর্থ মিলে শান্ত করতে হয়েছিল।
এই মন্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, এমন সংবেদনশীল সময়ে সতীর্থদের ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া এভাবে প্রকাশ করা কতটা যৌক্তিক। ব্যাপক আলোচনার পর বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করেন রিশাদ হোসেন।
নিজের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া বিবৃতিতে রিশাদ বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি আমার সাম্প্রতিক এক মন্তব্য ভুল ব্যাখ্যার জন্ম দিয়েছে এবং কিছু সংবাদমাধ্যম তা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। দুবাই বিমানবন্দরে হঠাৎ করেই দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমি আবেগপ্রবণ হয়ে কিছু কথা বলেছিলাম, যেটি পুরো প্রেক্ষাপটে না আসায় ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি ড্যারিল মিচেল ও টম কারেনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। তাদের যে ভুল বার্তা গেছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছি। লাহোর কালান্দার্সের পরিবার হিসেবে আমরা একে অন্যের পাশে থাকি, এটাই আমাদের শক্তি।’
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় পিএসএল ফের মাঠে গড়ানোর আশা করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সব কিছু ঠিক থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যেই আবার শুরু হতে পারে টুর্নামেন্টের বাকি অংশ। রিশাদ নিজেও অপেক্ষায় আছেন ফের মাঠে নামার। তার ভাষ্য, ‘পিএসএল ফের শুরু হলে আমি আমার দলে ফিরব। মাঠে ফেরার জন্য আমি পুরোপুরি প্রস্তুত।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা বাড়ানোর এই সুযোগে রিশাদ একদিকে যেমন নজর কেড়েছেন পারফরম্যান্সে, তেমনি শিখেছেন গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা—মাঠের বাইরের কথাও কতটা সতর্কভাবে বলতে হয়। সময়ই বলবে, বিতর্কের এই অধ্যায় পেরিয়ে ভবিষ্যতে তিনি কেমনভাবে সামলে নেন নিজের ক্রিকেটযাত্রা।