আবারও বুক পেতে দিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কমালো সুন্দরবন
উপকূলে যতবার ঝড়ে তাণ্ডব চালায়, ততোবারই বুক পেতে দিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমায় বাংলাদেশের ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবন। প্রতিবারের ন্যায় এবারও ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব ঠেকিয়ে দিয়ে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও পটুয়াখালী অঞ্চলকে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, রবিবার রাতে সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে প্রবল এ ঘূর্ণিঝড়টি। মধ্যরাতে এখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার।
মাঝরাতে জেলাজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ঝড়ের কবলে অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। জোয়ারে ভেসে গেছে মাছের ঘের। তবে বড় কোনো ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে সুন্দরবন। বিশেষ করে ঝড়ের সময় বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে এনেছে সুন্দরবন।
সাতক্ষীরার স্থানীয় এক সাংবাদিক বলেন, রেমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত। তবে বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে, যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমাল রাতে সাতক্ষীরা উপকূলে তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছ উপড়ে গেছে। এছাড়া এখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস বইছে। এছাড়া জোয়ারের পানি এখনও নামেনি।
তিনি বলেন, বৃষ্টিতে বেড়িবাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। পানি এখনও কমছে না। এতে অনেক এলাকায় বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে।
২০০৯ সালে ১২০ কিলোমিটার গতির ঘূর্ণিঝড় আইলা ও ২০০৭ সালে ২৬০ কিলোমিটার গতির ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় সিডরের তাণ্ডবে বুক পেতে দিয়েছিল এই সুন্দরবন।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যে জেলা অতিক্রম করেছে। ঘূর্ণিঝড়টি যখন মাঝ রাতে আঘাত হানে তখন বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। জেলায় এখন পর্যন্ত ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে আজ সোমবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ৭টায় ঘূর্ণিঝড় রেমাল সংক্রান্ত আবহাওয়ার ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, তীব্র ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে খুলনার কয়রার কাছে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে এগিয়ে বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে দুর্বল হয়ে পড়বে।