জমি বেচে মনোনয়ন কিনে বাতিল হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন চৌকিদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
জার্নাল ডেস্ক জার্নাল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:৩৬ AM

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে জমি বেচে কিনেছিলেন মনোনয়নপত্র। নাটোর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে চেয়েছিলেন। তবে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মো. এসকেন আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়ন বাতিলের খবর শুনে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অঝোরে কাঁদেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ ঘটনা জানিয়েছে যমুনা নিউজ।

এসকেন আলী লালপুর উপজেলার বালিতিতা ইসলামপুর গ্রামের মৃত আকবর আলী ছেলে। তিনি লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ হিসেবে কর্মরত আছেন।

সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্নে বাড়ির এক কাঠা জমি বিক্রি করে নাটোর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন গ্রাম পুলিশ এসকেন আলী। মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা মাত্রই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, নিয়মানুযায়ী নির্বাচন করার জন্য সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু খবর পাই আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে এসে বাতিল করার কারণ জানতে পারিনি।

এদিকে নাটোর জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঁঞা জানান, কোনো এলাকায় নির্বাচন করতে হলে সেই এলাকার মোট ভোটার সংখ্যার এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর পূরণ করে জমা দিতে হয়। নাটোর-১ আসনে ১ শতাংশ ভোটার সংখ্যা ছিল ৩,৪৯৪ জন। কিন্তু এসকেন আলী মাত্র ৯৮০ জনের স্বাক্ষর জমা দিয়েছেন। তাই নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী শর্ত পূরণ করতে না পারায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

আপিল করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এসকেন বলেন, জমি বিক্রি করে আমি মনোনয়নপত্র কিনেছিলাম। সব টাকা খরচ হয়ে গেছে। আপিল করতে গেলে তো আরও টাকা লাগবে, সেই টাকা কই পাব।

মনোনয়ন পাবার নিয়মের শর্তের বিষয়ে তিনি বলেন, সাড়ে ৩ হাজার ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে হবে এটা তার জানা ছিল না। ২০ বছর আগে থেকেই তার খুব স্বপ্ন ছিল তিনি এমপি ভোট করবেন। তাই এবার তিনি তার নিজের বাড়ি করার এক কাঠা জমি বিক্রি করে সে টাকা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ভোট আসলেই তার মনের ভেতর খুব আনন্দ হয়। তিনি আগেও দুইবার মেম্বার পদে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। এছাড়াও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করতে পোস্টার ছাপিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক সংকটে ভোট করতে পারেননি। এবার মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় এমপি ভোট করার স্বপ্নটাও পুরণ হলোনা তার।

উল্লেখ্য, নাটোর-১ আসনে (লালপুর-বাগাতিপাড়া) মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ১৪ প্রার্থীর মধ্য পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।