পৃথিবীর সুরক্ষা ছাতা : ওজোন স্তরের প্রয়োজনীয়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অনলাইন অনলাইন
প্রকাশিত: ১৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:০৯ PM

বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীতে জলবায়ু প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হচ্ছে ওজোন স্তর ক্ষয়। সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মিকে প্রতিহত করে পুথিবীকে টিকিয়ে রেখেছে ঊর্ধ্বাকাশের ওজোন স্তর।

ওজোন স্তর পুথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার ঊপরে অবস্থিত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার নামক অঞ্চলে ওজোন গ্যাসের ঊপস্থিতি লক্ষ্য করা হয়। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে ফাঁকা গোলকের মতো আবৃত করে রেখেছে। ওজোন হলো হালকা নিলাভ আশটে গন্ধযুক এক বিশেষ ধরনের গ্যাস। তিনটি অক্সিজেন পরমাণু  দ্বারা গঠিত। অক্সিজেনের তুলনায় অনেক কম স্থিতিশীল এবং আরো বেশি প্রতিক্রিয়াশীল যার ফলে অন্য যোগের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার মাধ্যমে সহজেই গঠন এবং ভাঙন ঘটাতে পারে।

ফরাসি পদার্থবিদ চালর্স ফ্যব্রি এবং হেনরি বুইসন ১৯১৩ সালে ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশ আবহাওয়াবিদ জিএমবি ডবসন ওজোন স্তর নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন। ১৯২৮ সাল থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে তিনি ওজোন পর্যবেক্ষণ স্টেশনসমূহের একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেন। অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণে বায়ুমন্ডলের ঊচ্চ স্তরের অক্সিজেন অণু ভেঙে গেলে ওজোন গ্যাস তৈরি হয়। এটি যুক্ত অক্সিজেনের অণুর(ঙ২) সাথে মিলিত হয়ে তিনটি অক্সিজেন পরমাণু গঠিত হয় যা ওজোন গ্যাস(ঙ৩)নামে পরিচিত।

সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি থেকে জীবজগৎকে রক্ষা করা ওজোন স্তরের প্রধান কাজ। আমরা যখন অস ভাবিক কড়া রোদে বাইরে বের হই তখনই সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির বিকিরণের মৃদু প্রভাব গুলি অনুভূত হয়। রোদ থেকে বাঁচার জন্য আমরা সাধারণত সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। কিন্তু ভাগ্যক্রমে পৃথিবী তার নিজের সানস্ক্রিন (ওজোন লেয়ার) এর মাধ্যমে আমাদেরকে অতিবেগুনি রশ্ম্রি ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

ওজোন গ্যাস তৈরির জন্য একটি অপরিহার্য ঊপাদান হচ্ছে অক্সিজেন গ্যাস যা আল্ট্রাভায়োলেট বা অতিবেগুনি আলো শোষণ করে এবং সেই আলোকে পৃথিবীর পৃষ্ঠে পৌঁছাতে বাধা দেয়। অক্সিজেন গ্যাস এবং অক্সিজেনের আরেকটি রূপ এলোট্রোপ ওজোন স্তরে প্রচুর পরিমাণে বিদ্যমান।

বেশিরভাগ বাস্তুসংস্থানগুলো ক্ষতিকর টঠ থেকে সুরক্ষার জন্য ওজোন স্তরের উপর নির্ভরশীল।অতিবেগুনি রশ্মির তরঙ্গ দৈর্ঘ্য দৃশ্যমান আলোর থেকে কম তাই মানুষের কাছে এ রশ্মি দৃশ্যমান নয়। তবে মৌমাছি সহ আরো কিছু কীটপতঙ্গএ রশ্মি দেখতে পায়।