ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভাঙচুর শিক্ষার্থীদের
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের বাতিলের দাবিতে কার্যত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অচল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাইব্রেরি বন্ধ রাখায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এজন্য লাইব্রেরির প্রধান প্রবেশপথ ভাঙচুর করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আজ সোমবার (১ জুলাই) সকাল ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির গেট খোলা হবে এমনটি কর্মচারীরা জানালে শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করতে থাকেন। তবে গেট আর না খোলায় শিক্ষার্থীরা প্রবেশপথে সামনে থাকা কিছু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং গেটে ধাক্কাধাক্কি করেন। এতে প্রবেশপথের বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন তবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা তারা কীভাবে বন্ধ করে দেয়? ক্লাস-পরীক্ষাসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তাই বলে লাইব্রেরি কেন বন্ধ হবে যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা এমনিতেই নেই। এর ফলে আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলেও মন্তব্য করেন তারা।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা বলেন, এই আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবে। সর্বাত্মক সব প্রকার প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কাজ বন্ধের অংশ হিসেবে বন্ধ রয়েছে। আন্দোলনে সর্বাত্মক বন্ধ রাখার জন্য এটা করা হয়েছে। ছাত্রদের জন্যই এ আন্দোলন, আগামীতে তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের জন্য আমাদের কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমরা বারবার বলেছি, কঠিন সিদ্ধান্তে যেতে বাধ্য করবেন না। আমাকে প্রশ্ন না করে অর্থ মন্ত্রণালয়কে প্রশ্ন করুন কেন ছাত্ররা লাইব্রেরি ঢুকতে পারছে না, শিক্ষকদের লাইব্রেরি না খোলার মত অবস্থায় যেতে হলো।
এদিকে সোমবার সকাল থেকেই সারাদেশের ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মবিরতি চলছে। কর্মবিরতির সমর্থনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের মূল ফটকের অভ্যন্তরে শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। একইসঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কর্মবিরতি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে, বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক ভবনের দাপ্তরিক কার্যক্রমও। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে গিয়ে জরুরি চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এর আগে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া। তাদের দাবিগুলো হলো, ‘প্রত্যয়’ স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন।