ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
-1201116.jpg?v=1.1)
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় খোলার অনুমতি দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে সরকারের এ উদ্যোগের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
আজ রবিবার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তাঁরা এ প্রতিবাদ জানান।
সমাবেশে অংশ নেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, "গত বছরের জুলাইয়ে আমরা যে অভ্যুত্থান করেছিলাম, তার মূল মোটিভেশন ছিল শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন। আজ আবার আন্তর্জাতিক আধিপত্যবাদী শক্তিগুলো ঢাকায় জাতিসংঘের অফিস বসিয়ে আমাদের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে।"
সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপনসংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি বাতিলের দাবি জানান।
তারা জানান, আন্তর্জাতিক শক্তির হস্তক্ষেপ কখনোই দেশের জন্য সুফল বয়ে আনে না। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক কাঠামো গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সমাবেশে বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী জিয়াউল হক জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের কার্যালয় স্থাপনের বিরোধিতা করে চারটি প্রধান যুক্তি তুলে ধরেন। সেগুলো হলো-
১. সার্বভৌমত্বের হুমকি: জাতিসংঘের উপস্থিতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের সুযোগ তৈরি করবে। এতে দেশের পররাষ্ট্রনীতির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উসকানি দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায় একটি পরিকল্পিত খ্রিস্টান-ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের ঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।
২. মূল্যবোধের দ্বন্দ্ব: এই কার্যালয়ের মাধ্যমে এলজিবিটিকিউ অধিকার ও পতিতাবৃত্তির বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে, যা বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। এসব বিষয় শিক্ষা পাঠ্যক্রমেও চাপিয়ে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
৩. আন্তর্জাতিক মর্যাদায় নেতিবাচক প্রভাব: বক্তার মতে, যেসব দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কার্যালয় রয়েছে, তারা আন্তর্জাতিকভাবে দুর্বল হিসেবে বিবেচিত। বাংলাদেশে এ কার্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে বিশ্বদরবারে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
৪. মৃত্যুদণ্ড নিয়ে চাপ: জাতিসংঘের কার্যালয় থেকে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হতে পারে, যাতে খুনি ও ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করা হয়। এতে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হবে এবং অপরাধের হার বাড়তে পারে।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী জিয়াউল হক আন্তর্জাতিক সংস্থাটির কার্যালয় স্থাপনের বিপক্ষে চারটি যুক্তি তুলে ধরেন। সেগুলো হচ্ছে—
সার্বভৌমত্বের হুমকি: জাতিসংঘের কার্যালয় দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে। পররাষ্ট্রনীতিতে স্বাধীনতা হারাবে বাংলাদেশ। পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহিত করা হবে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র পরিবর্তনের জন্য পরিকল্পিত খ্রিষ্টান-ইহুদি রাষ্ট্র গঠনের পথ তৈরি করা হবে।
মূল্যবোধের সংঘর্ষ: এই কার্যালয় এলজিবিটিকিউ ও পতিতাবৃত্তির স্বীকৃতি ও প্রসারে কাজ করবে, যা দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। শিক্ষাব্যবস্থায় এই বিষয়গুলো চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
আন্তর্জাতিক মর্যাদার অবনতি: যেসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় রয়েছে, সেসব দেশের অবস্থান বিশ্ব দরবারে দুর্বল। দেশে এই কার্যালয় স্থাপন আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করবে।
মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রশ্নবিদ্ধ: জাতিসংঘের কার্যালয় থেকে সরকারের ওপর চাপ তৈরি হবে, যেন খুনি ও ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করা হয়। এতে দেশে অপরাধ বাড়বে এবং ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত হবে।