ধানকাটার উৎসব
দেশের জেলায় ১৩টি কৃষকরা ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু করেছেন
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন গত এক সপ্তাহ থেকে জেলার ১৩ টি উপজেলায় ইরি-বোরো পাকা ধান পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে । মৌসুমের শেষ পর্যায়ে ফসলের অবস্থা খুব ভালো রয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের জেলায় ইরি- বোরো বাম্পার ফলন উৎপাদন হয়েছে। আগাম জাতের ধান পেকেছে। ধানকাটা নিয়ে কৃষকেরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
তিনি বলেন, জেলার ১৩ টি উপজেলায় কৃষকদের অর্ধেক ভর্তুকি মূল্যে আধুনিক ধান কাটার মেশিন হারভেস্ট ১ হাজার ২০০ টি সরবরাহ করা হয়েছে। এ ধান কাটার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ একর জমির ধান কাটা ও মাড়াই একই সাথে করা যায়। ফলে ধান কাটার জন্য কৃষকদের শ্রমিক নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে না। ধানের জমিতে ধান কর্তনের পর একই সাথে মাড়াই করে ধান বস্তায় ভরা হয়।
এ আধুনিক প্রযুক্তির মেশিন ব্যবহারে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই পাকা ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে। কৃষকরা সহজেই স্বল্প খরচে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পেরে খুব খুশি। এছাড়া ধান কাটা মাড়াইয়ের জন্য ছোট বড় অনেক ধরনের আধুনিক মেশিন কৃষকদের নাগালে এসেছে। কৃষকরা এসব মেশিন ব্যবহারে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারছেন। এভাবে ধানের জেলা দিনাজপুরে এখন মহা উৎসবে ইরি-বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের কাজ চলছে।
একই সাথে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের জমিতে ধান মাড়াই এর পর খড় শুকানো সম্ভব হচ্ছে। শুকনো খড় কৃষকরা সহজেই মাঠ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতে পারছেন। গবাদি পশু পালনের জন্য খড়ের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কৃষকদের নিজেদের চাহিদা পূরণের পর অবশিষ্ট খড় ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন। গবাদি পশুদের জন্য উত্তম খাবার এ খড় প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, গতকাল রোববার পর্যন্ত জেলায় প্রায় ১০ ভাগ ধান কাটা মাড়াই হয়েছে ।
চলতি বছর ইরি-বোরো ধান মাঠে প্রায় অর্ধেক পেকেছে । কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটার আগেই মাঠের ধান -কেটে ঘরে তুলতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। চলতি মাসের ৩১ মে' মধ্যে মাঠের সব ধান কাটা-মাড়াইয়ের তাগিদ দিয়ে কৃষি বিভাগ কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ধান কাটার জন্য জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় কৃষি বিভাগ ভর্তুকির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ধান কাটার আধুনিক মেশিন কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। যার সফলতা কৃষকরা পাচ্ছেন।
কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক বলেন, এবার দিনাজপুর জেলার ইরি- বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।
দিনাজপুর সদর উপজেলার উলিপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক ও রিয়াজুল ইসলাম জানান, মাঠের ধান পেকেছে তারা ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করে দিয়েছেন। খুব স্বল্প সময়ে তারা পাকা ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন।
জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জঅন জানান, ইরি, বোরো ধানের মাঠগুলো ঘুরে দেখো গেছে ,মাঠের অর্ধেক ধান পেকেছে । কৃষকেরা ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে জমিতে থাকা পাকা ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তর কর্মকর্তা আরশেদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় ১ লাখ ৭২ হাজার ২০০হেক্টর জমিতে ইরি- বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অতিরিক্ত ২ হাজার ৫০০ হেক্টরে ধান চাষ অর্জিত হয়ে মোট এক লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ধানের ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন চাল। আশা করা হচ্ছে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৮ লাখ মেট্রিক টন ছড়িয়ে যাবে।
সূত্র: বাসস