বান্দরবানের স্বর্ণমন্দির যাবেন যেভাবে
বান্দরবানের স্বর্নমন্দির শহরের বালাঘাটা এলাকায় অবস্থিত। স্বর্নমন্দির হলেও মূলত এটি একটি বৌদ্ধ মন্দির, যেখানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে এবং এটি বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা বড় বৌদ্ধ মন্দির।
২০০০ সালে দক্ষিণ পূর্ব এশীয় ধাঁচে বার্মার স্থাপত্যবিদের তত্ত্বাবধানে মন্দিরটি নির্মিত হয়। এটি লোকমুখে স্বর্ণমন্দির নামে পরিচিত পেলেও এটি স্বর্ণ নির্মিত নয়। মানুষ আগে থেকেই সোনালী রঙের জন্যই এটিকে স্বর্নমন্দির বলে আসতেছে।
মূলত সোনালী রঙের আবরনে আবৃত বলেই এটির নাম হয়েছে স্বর্ণমন্দির।
এখানে কি আছে দেখার মতো –
এখানে পাহাড়ের উপরে একটি পুকুর আছে, নাম দেবতা পুকুর। দেবতা পুকুরটি সাড়ে তিনশত ফুট উঁচুতে। কিন্তু এটি এতো উঁচুতে হলেও কখনো পানির কমতি দেখা যায় না। প্রায় সব মৌসুমেই এই দেবতা পুকুরে পানি থাকে। বৌদ্ধ ভান্তে-দের মতে, এটা দেবতার পুকুর তাই পানি এখানে সবসময় দেখা যায়। অপরূপ সৌন্দর্য্যের আধার বান্দরবানের পর্যটন কেন্দ্র গুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় একটি হল বুদ্ধ ধাতু জাদি ক্যাং। এই জাদিটি বৌদ্ধ সমপ্রদায়ের তীর্থস্থান। এবং শুধু তীর্থ স্থানই নয়, জাদি ক্যাং এখন দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষনীয় স্পটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখা যায় এখানে।
ঢাকা থেকে কিভাবে যাবেন-
প্রথমে ঢাকা থেকে বান্দরবান আসতে হবে তারপর সেখান থেকে স্বর্ণমন্দির আসতে হবে।
*ঢাকা থেকে বান্দরবান যাবেন যেভাব –
ঢাকা থেকে বাসে বান্দরবান যেতে সময় লাগে (৮-১০) ঘন্টা।
ভাড়া: নন-এসি (৫৫০ টাকা), এসি (৯৫০-১৫০০) টাকা এমন হতে পারে।
বান্দরবান যায় এমন কয়টা বাসের নাম = হানিফ, শ্যামলি, ইউনিক, ডলফিন, এস.আলম, সৌদিয়া, সেন্টমার্টিন পরিবহন।
এছাড়া চট্টগ্রামে ট্রেন বা এয়ারে গিয়ে সেখান থেকেও বান্দরবান যাওয়া যাবে। চট্টগ্রামের বদ্দারহাট থেকে দুটি বাস বান্দরবানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে- পূবালী ও পূর্বাণী। এ দুটি বাসে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ২২০ টাকা।
* তারপর বান্দরবান থেকে স্বর্ণমন্দির যাওয়ার জন্য অনেক পরিবহনের ব্যবস্থা রয়েছে। সিএনজি, চাঁদের গাড়ি ও জীপ পাওয়া যায় বান্দরবান থেকে স্বর্নমন্দির যাওয়ার জন্য। আপনি আপনার সুবিধা এবং মন মতো কোন একটা পরিবহনে করে যেতে পারেন।
ভাড়া বিস্তারিত দেয়া হলো –
* অটো রিকশায় যাওয়া আসার জন্য ভাড়া লাগে (৫০০-১০০০) টাকা আর,
* জীপ (৮০০-১২০০) টাকা,
* চাঁদের গাড়ি ভাড়া করতে (১০০০-২০০০) টাকা লাগে।
যে কোন ভাড়া দর-দাম করে কম বেশি হতেও পারে, তাই আপনাকে একটু বুঝেশুনে দর-দাম করে নিতে হবে।
স্বর্নমন্দির এর কোথায় থাকবেন –
প্রতিটি কটেজে দুইটি করে রুম আছে, প্রতি রুমের ভাড়া পড়বে ৩০০০ টাকা। আগে থেকেই যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখা ভালো।
* হোটেল হিল ভিউ: বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর পাশেই (৮০০ -২৫০০) টাকা।
* হোটেল হিলটন: বান্দরবান শহরের বাস স্ট্যান্ড এর কাছেই (৮০০- ৩০০০) টাকা
* হোটেল প্লাজা: বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫মিনিট হাঁটা দূরত্বে (৬০০০-৩০০০) টাকা।
* রিভার ভিউ :- শহরের সাঙ্গু নদীর তীর ঘেষে হোটেলটির অবস্থান (৬০০-২০০০)টাকা।
* পর্যটন মোটেল: পাহাড় ও লেকের পাশেই অবস্থিত। শহর থেকে ৪ কি:মি: দুরে মেঘলায় অবস্থিত ( ১২০০-২৫০০ টাকা)।
নীলগিরি এবং নীলাচল গেলে যেখানে থাকবেন স্বর্নমন্দির গেলেও সেখানেই থাকতে পারবেন। সব গুলো জায়গা পাশাপাশি। আমাদের নীলগিরি এবং নীলাচল নিয়ে লিখা ব্লগের লিংক দিয়ে দেয়া আছে, দেখে নিবেন যদি থাকার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চান।
লক্ষনীয় বিষয়াদি –
বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ব্যতীত অন্যান্য ভ্রমনার্থীদের টিকিটের বিনিময়ে মন্দিরটি দর্শনের ব্যবস্থা রয়েছে, জনপ্রতি ৫০ টাকা লাগবে টিকেট কাটতে।