নতুন এআই মডেল ‘লামা ৪’ নিয়ে এল জাকারবার্গের মেটা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক জার্নাল আন্তর্জাতিক জার্নাল
প্রকাশিত: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০১ AM

পরবর্তী প্রজন্মের লামা এআই মডেল নিয়ে এসেছে মার্ক জাকারবার্গের প্রতিষ্ঠান মেটা। লামা ৪ নামের এই নতুন সংস্করণটি গত শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রকাশিত হয়। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে যে, লামা ৪ স্কাউট এবং লামা ৪ মাভেরিক মডেল দুটি এখন পর্যন্ত তাঁদের সবচেয়ে উন্নত এআই মডেল, যা জনপ্রিয় লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেল (এলএলএম)গুলোর সমকক্ষ।

লামা ৪ ভার্সনের এআই মডেল দুটি, স্কাউট ও মাভেরিক, মাল্টিমডাল এআই সক্ষমতাসম্পন্ন। এর মানে হলো, এই মডেলগুলিতে সব ধরনের কনটেন্ট (টেক্সট, ইমেজ, অডিও ও ভিডিও) ইনপুট দেওয়া যাবে এবং ইচ্ছেমতো যেকোনো ফরম্যাটে আউটপুট তৈরি করা যাবে। মেটার বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, নিজেদের শ্রেণীর মধ্যে স্কাউট ও মাভেরিক হলো সেরা মাল্টিমডাল এআই মডেল।

লামা ৪ সংস্করণের মাভেরিক ও স্কাউট মডেল দুটিকে ওপেন সোর্স সফটওয়্যার হিসেবেও ঘোষণা করেছে মেটা। অর্থাৎ, কেউ চাইলে এই মডেল দুটিকে নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন কাজের উপযোগী করে কাস্টমাইজ করে নিতে। এজন্য কোনো অর্থও প্রদান করতে হবে না ব্যবহারকারীদেরকে।

মাভেরিক ও স্কাউট মডেল দুটির পাশাপাশি লামার নতুন সংস্করণে আরও একটি মডেল আছে, যার নাম লামা ৪ বেহিমথ। মেটা বলছে, বেহিমথ তাঁদের এযাবতকালের সবচেয়ে শক্তিশালী এআই মডেল এবং বর্তমানে প্রচলিত সবচেয়ে বুদ্ধিমান এআই মডেলগুলোর একটি। বেহিমথ মূলত একটি টিচার মডেল, অর্থাৎ নতুন এআই মডেলের প্রশিক্ষণে ব্যবহার করা হয় এটি। উল্লেখ্য, ‘ডিস্টিলেশন’ প্রক্রিয়া ব্যবহার করে বেহিমথ টিচার মডেলটি দিয়েই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে লামা ৪ স্কাউট ও লামা ৪ মাভেরিক মডেল দুটিকে।

২০২২ সালের নভেম্বরে ওপেনএআই বাজারে নিয়ে আসে জেনারেটিভ (জেন) এআই প্রযুক্তির চ্যাটবট চ্যাটজিপিটি। এরপর থেকেই হু হু করে বাড়তে থাকে এআই প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে জেন এআই-ভিত্তিক বিভিন্ন টুল ও ফিচারে রীতিমতো সয়লাব হয়ে যায় প্রযুক্তি বাজার। উত্তরোত্তর বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেতে থাকে এ খাতে। মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজনের মতো শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করে এআই খাতে। ফলে এআই’র বাজারে বর্তমানে চ্যাটজিপিটির সমকক্ষ বা তাঁর চেয়েও শক্তিশালী এআই চ্যাটবট ও মডেল রয়েছে।

মার্ক জাকারবার্গের সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট মেটা নিজেও এআই খাতে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তাঁদের ওপেন সোর্স এআই মডেল লামা ইতোমধ্যেই বহুল-ব্যবহৃত মডেলগুলোর একটি। বিশেষ করে ওপেন সোর্স হওয়ার কারণে অনেকেই লামা মডেলটিকে কাস্টমাইজ করে ব্যবহার করছে। উল্লেখ্য, মেটার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে যেমন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপে লামা-ভিত্তিক এআই অ্যাসিসট্যান্ট ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

মেটা এ বছর এআই অবকাঠামোর উন্নয়নে ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা করেছে বছরের শুরুতেই। যদিও এআই খাতে বড় অংকের অর্থায়নের বিপরীতে মুনাফা অর্জন এখনও আশানুরূপ নয় কোনো প্রতিষ্ঠানেরই। ফলে বিনিয়োগকারীদের চাপ রয়েছে মেটার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর। কিন্তু তা স্বত্বেও, অচিরেই এআই খাতে বিনিয়োগ হ্রাস, এমন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র: মেটা, রয়টার্স,