গণপূর্ত ইএম (বিভাগ-৩)
আজিমপুর নতুন কলোনিতেও পাঁচ বছরে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ৩৫ কোটি
গণপূর্ত অধিদপ্তরের নতুন কলোনি আজিমপুর ইএম (বিভাগ-৩)-এ গত পাঁচ বছরে রক্ষণাবেক্ষণ খাতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। অথচ আজিমপুর কলোনির বেশিরভাগ ভবন গত তিন বছর আগে নির্মিত। নতুন এসব ভবনে বৈদ্যুতিক খাতে খরচের খুব একটা জায়গা নেই। কিছু পুরাতন ভবন থাকলেও সেখানে গণপূর্তের এ বিভাগের সেবা নেই বললেই চলে। ফলে কলোনির সচেতন বাসিন্দাদের ধারণা, গত ৫-৬ বছরে রক্ষণাবেক্ষণের নামে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ বেশিরভাগই ভুয়া বিল-ভাউচারে ভাগ বাটোয়ারা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরে গণপূর্ত অধিদপ্তরের পরিচালন বাজেটে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের আওতাধীন সংস্থাটির গণপূর্ত ইএম (বিভাগ-৩) আবাসিক-অনাবাসিক সবমিলিয়ে ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। একই বিভাগ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৭৬টি কাজের বিপরীতে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করেছে। এ বিপুল টাকার বেশিরভাগই আগামী জুনের মধ্যে শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সমস্ত টাকা খরচের আয়োজনও শেষ করেছে বলে জানা যায়। গত অর্থবছরগুলোর নথিপত্র ঘেটে দেখা যায়, বৈদ্যুতিক সেবা সংক্রান্ত যেসব আবাসিক ভবন বা বাসাবাড়ির তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে তার বেশিরভাগেরই অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। এমনকি যেসব বাসায় কাজের নামে বিল করা হয়েছে, সেসব বাসার বাসিন্দারা কিছুই জানেন না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক বাসিন্দা বলেন, গণপূর্তের ইএম বিভাগের সেবা নেই বললেই চলে। কলোনির বেশিরভাগ ভবন নতুন। সেখানে ছোটখাটো যেসব কাজ প্রয়োজন হয়, আমরা নিজ খরচে তা সমাধান করি। তবে আতঙ্কের বিষয় এই, নতুন ভবনগুলোতে যে ফায়ার বা অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র আছে শুনেছি সেগুলো কাজে আসবে না। এছাড়া বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন বসানোর জন্য প্রায় ৩৮ কোটি টাকা খরচ করেছে। সেখানেও বড় ধরণের অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উচিত কলোনির বৈদ্যুতিক রক্ষণাবেক্ষণ ও অগ্নি নির্বাপন যন্ত্র বসানোর নামে সংশ্লিষ্টরা কী পরিমাণ অর্থ লোপাট করেছে তা তদন্ত করে দেখা।
গণপূর্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সংস্থাটির ইএম বিভাগ-৩ মূলত আজিমপুর এলাকার দায়িত্বে আছেন। সেখানে পাঁচ বছর ৭ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর নেওয়াজ। তার সঙ্গে ছিলেন গণপূর্ত ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতির সাবেক সভাপতি এ কে এম গোলাম মোস্তফা। মূলত, প্রভাবশালী এ দুই প্রকৌশলীই প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা রক্ষণাবেক্ষণের নামে খরচ দেখিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে প্রকৌশলী তানভীর নেওয়াজ সিটিজেন জার্নালের এ প্রতিবেদককে বলেন, ৪-৫ বছরে সবমিলিয়ে ২০-২২ কোটি টাকা খরচ করেছি। এর মধ্যে কর্মচারীদের বেতন ভাতাও রয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি।