কথা-কবিতা আর গানে মাধবীবরণ
প্রতিবার ফাল্গুনের এইদিনে মাধবীলতাকে ঘিরে রমনা উদ্যানে পালিত হয় ব্যতিক্রমধর্মী মাধবীবরণ উৎসব।উদ্যানের মাধবী চত্বর প্রাঙ্গণে নিসর্গপ্রেমীদের সংগঠন তরুপল্লবের এ উৎসবে যোগ দেন অর্ধশত প্রকৃতিপ্রেমী।
ঝরাপাতার দিন পেরিয়ে প্রকৃতিতে ফাগুন আসে মাধবী ফুলের হাত ধরে। কোকিলের কুহুগানে এ ফুলের শোভা-সৌরভে চারপাশ এখন মুখর। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতা-গানে মাধবীলতাকে অনন্য রূপে তুলে ধরলেও ফুলটি চেনেন না অনেকেই। কেউ কেউ মধুমঞ্জরীলতা বা মধুমালতীকে মাধবী ভেবে ভুল করেন। প্রকৃতিপ্রেমীদের প্রিয় ফুলটিকে ঘিরে আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার রাজধানীর রমনা পার্কে হয়ে গেল ‘মাধবীবরণ অনুষ্ঠান’। তরুপল্লবের ষষ্ঠবারের এ আয়োজনে যোগ দেন অর্ধশত মানুষ।
দেখতে কেমন আসল মাধবীলতা?
কথা, কবিতা, গানে ছিল মাধবী ও প্রকৃতিবন্দনা। তরুপল্লবের সাধারণ সম্পাদক মোকারম হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি ও প্রকৃতি সংগঠক শাহজাহান মৃধা বেনু, শিশুসাহিত্যিক সুজন বড়ুয়া, লেখক আব্দুল মান্নান খান, প্রকৃতি-লেখক জায়েদ ফরিদ, আলোকচিত্রী আককাস মাহমুদ, এডমান্ড গুডা, এনায়েত হোসেন খান প্রমুখ।
রমনায় সবচেয়ে বড় মাধবীলতার ছায়ায় প্রকৃতিপ্রেমীরা
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমাদের গান-কবিতায় মাধবী যেভাবে আছে, প্রকৃতিতে সেভাবে ফুলটি নেই। আমাদের বন-পাহাড়ের একসময়ের বাসিন্দা ফুলটি এখন কেবল নগর উদ্যানে টিকে আছে। বাংলার নিজস্ব উদ্ভিদ ঐহিত্যের বার্তাবাহী ফুল মাধবীলতাকে দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। এ লক্ষ্যে তরুপল্লবের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে মাধবীর চারা রোপণ করা হয়েছে বলে জানান সংগঠনটির কর্তারা।
পুরনো দিনের গল্পে বলছিলেন প্রকৃতি কথা, সেইসব স্মৃতির মুহূর্তগুলো
আনন্দ-মুখর প্রকৃতি প্রেমীদের শ্রেতারা
হঠাৎ আসে বৃষ্টির ঝাপটা, তখন কথা বলে পাশের গোলঘরে।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন গোলাম শফিক, সুজন বড়ুয়া ও জান্নাতুন নুর দিশা। আয়োজনের শেষে ছিল মোয়া-মুড়কিসহ বিচিত্র খাবারের সমন্বয়ে বাসন্তী আপ্যায়ন। ২০০৮ সালের ৫ ডিসেম্বর রমনাপার্কে গাছ চেনানোর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তরুপল্লবের যাত্রা শুরু। তরুপল্লব এ পর্যন্ত ৩৫টি গাছ চেনানোর অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ ও প্রকৃতিবিষয়ক সাময়িকী প্রকৃতিপত্র প্রকাশসহ সচেতনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।