চোখের স্বাস্থ্য: মনে রাখুন কিছু খাবারের নাম
আমাদের মানবজীবনে চোখ অমূল্য সম্পদ। এ কারণে শরীরের এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীর সুস্থ রাখেতে অনেকে শারীরিক ব্যায়াম, সুস্বাস্থ্যের জন্য চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে খাদ্যতালিকায় নির্দিষ্ট পুষ্টি যোগ করা জরুরি। চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পাঁচটি ভিটামিন খুবই উপকারী। প্রাকৃতিক নানা উৎস থেকে শরীর এসব ভিটামিন গ্রহণ করে।
ভিটামিন এ
ভিটামিন এ ‘ভিশন ভিটামিন’ হিসাবে পরিচিত। এই ভিটামিন চোখের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই ভিটামিন রেটিনার কার্যকারিতা বাড়ায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতিদিন ৯০০ মাইক্রোগ্রাম এবং প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ৭০০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন নিশ্চিত করা জরুরি। এই পরিমাণ ভিটামিন এ পেতে খাদ্যতালিকায় যেসব খাদ্য রাখতে পারেন-
কড লিভার অয়েল: ভিটামিন এ এর একটি শক্তিশালী উৎস কড লিভার তেল। এটি চোখের স্বাস্থ্যের উন্নত রাখে।
গাজর: গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন রয়েছে, যা ভিটামিন এ-এর ভালো উৎস। এই ভিটামিন, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখার জন্য অপরিহার্য।
আম এবং পেঁপে: গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এই ফলগুলো শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়, চোখের কার্যকারিতা উন্নত করতে বেশ কার্যকর।
শাক-সবজি: পালং শাক, পাতাকপি এবং অন্যান্য শাক-সবজিতে ভিটামিন এ-এর পাশাপাশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। এই উপাদান চোখকে ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে যা বয়স-সম্পর্কিত চোখের জটিলতা রোধ করতে পারে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন ই গ্রহণ জরুরি। এজন্য খাদ্যতালিকায় যা রাখতে পারেন-
সূর্যমুখীর বীজ: ভিটামিন ই- তে ভরপুর সূর্যমুখী বীজ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য।
পালং শাক:সুপারফুড পালং শাক ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। এটি দৃষ্টিশক্তি উন্নত রাখতে ভূমিকা রাখে।
বাদাম: ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বাদাম শুধু খেতেই সুস্বাদু নয়,চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যও অপরিহার্য।
ভিটামিন সি : ইমিউন-বুস্টিং বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত ভিটামিন সি চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি চোখের রক্তনালীর স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং ছানি পড়ার ঝুঁকি কমাতে পারে। প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি’য়ের চাহিদা পূরণে যেসব খাবার খেতে পারেন-
কমলা এবং লেবু: কমলা এবং লেবুর মতো সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। এসব ফল ছোখ ভালো রাখতে ভুমিকা রাখে।
ব্রকলি: এই সবজিটি শুধুমাত্র পুষ্টিতে ভরপুর তাই নয়, এটি ভিটামিন সি-এর একটি সমৃদ্ধ উৎস, যা চোখের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
জিঙ্ক
জিঙ্ক এমন একটি অপরিহার্য খনিজ যা চোখের স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন শারীরিক কার্যক্রমে অবদান রাখে। দৈনন্দিন জিঙ্কের চাহিদা পূরণে খেতে পারেন-
ছোলা: জিঙ্ক সমৃদ্ধ ছোলা চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে।
কাজুবাদাম: বাদাম জিঙ্কের একটি ভালো উৎস। এটিও দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
ওটস: জিঙ্কসমৃদ্ধ ওটস চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড হল অপরিহার্য চর্বি যা চোখের স্বাস্থ্য, বিশেষ করে রেটিনার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার অবক্ষয়ের ঝুঁকি কমাতে পারে। আপনার ডায়েটে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের যেসব উৎস যোগ করতে পারেন-
মাছ: চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিশক্তি বজায় রাখে।
চিয়া বীজ এবং ফ্ল্যাক্সসিড: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ চিয়া বীজ এবং ফ্ল্যাক্সসিড চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আখরোট: আখরোট ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সমৃদ্ধ উৎস, যা চোখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
ভালো থাকুক আপনার চোখের স্বাস্থ্য।