সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে

রাতের ঘুমই আমাদের জন্য বেশি উপকারী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৩ PM

প্রকৃতির সবকিছু সৃষ্টিকর্তার আইন মেনে চলে। মানুষের শারীরবৃত্তীয় কর্মকাণ্ডও তার ব্যতিক্রম নয়। পবিত্র কুরআন মজিদে আল্লাহ বলেছেন, "তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণ, নিদ্রাকে করেছেন আরামপ্রদ আর দিনকে করেছেন আবার জীবন্ত হয়ে উঠার সময়।" (সূরা আল ফুরকান, আয়াত ৪৭)

"তিনিই তাঁর রহমাতের দ্বারা তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন দিন ও রাত, যাতে তোমরা বিশ্রাম গ্রহণ কর এবং তাঁর অনুগ্রহ তালাশ কর, এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।" (সূরা আল কাসাস, আয়াত ৭৩)

অনেকে অহেতুক রাত জেগে দেরি করে ঘুমাতে যান, তারা ঘুমের বহুবিধ উপকার থেকে বঞ্চিত হন। ঘুমাতে যাবার সঠিক সময় হল রাত ১০টা থেকে এগারটার মধ্যে। এ সময় থেকে রাত ২টা বা তিনটা পর্যন্ত সময়ের গভীর ঘুমকে ডেল্টা স্লিপ বলে। এই ঘুমে শরীর ফুল রিল্যাক্সে থাকে। কোষ ও টিস্যু রিজেনারেশন এবং গ্রোথের মাধ্যমে শরীরের ক্ষয় পূরণ হয়। ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়। ডিপ স্লিপ বা ডেল্টা স্লিপ আপনার ঘুমের কোয়ালিটি নির্ধারণ করে।

অন্যদিকে, এই ঘুম যদি কেউ না পায় তাহলে বাকি ২৪ ঘন্টায় ২০ ঘন্টা ঘুমালেও ঘুমের আসল তৃপ্তি পাওয়া যায় না।

আর ডেল্টা স্লিপ না পাওয়ার ফলে ব্রেনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া শুরু করে। পড়তে, খেতে এবং যেকোনো কাজ করতে আলসেমি অনূভুত হয়।

তিনি সঠিকভাবে ব্রেকফাস্ট করেন না। ফুড সার্কেল নষ্ট হয়। তাঁর সারা দিনের কাজের সিস্টেমে গোলযোগ হয়। সূর্যের আলোর মাধ্যমে ভিটামিন ডি থেকে বঞ্চিত হন। শুধু তা–ই নয়, ভিটামিন এ, ই থেকেও বঞ্চিত হন। দিনে ঘুমিয়ে রাত জাগলে মুখের টোনিং নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে। মানসিক অবসাদে ভুগতে পারেন। ওজন বাড়তে পারে। তা ছাড়া রাতে ঘুমের যেমন পরিবেশ, দিনে অনেক ক্ষেত্রেই সেটি পাওয়া যায় না। তাই দিনের ঘুম রাতের মতো গভীর হয় না। ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। কেননা, রাতে দিনের মতো হাঁটাচলা হয় না। কিন্তু জাংক ফুড, ইরিটেটিং ফুড খাওয়ার প্রবণতা বাড়ে। এসব কারণে রাতের ঘুমই সেরা। দিনে ঘুমানো মন্দের ভালো।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ঘুম না হলে একজন মানুষ ক্রমাগত শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। এর ফলে একটি সুন্দর জীবনও বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, পুষ্টি ও ব্যায়ামের পাশাপাশি ঘুম আমাদের সার্বিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।