রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সুন্নাতের আলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ আমদেরকে নিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সিটিজেন ডেক্স সিটিজেন ডেক্স
প্রকাশিত: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ AM

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, "মুখের ভাষা ও চরিত্রের মাধুর্য দিয়ে নবী করিম (সা.) এর শিক্ষা ও আদর্শের সৌন্দর্য দুনিয়ার সামনে তুলে ধরা প্রতিটি মুসলমানের উপর কর্তব্য। জাতীয় জীবনে সুন্নাতের অনুসরণ না থাকায় আমরা বারবার পথ হারাচ্ছি।"

গত ৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত সেমিনারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন প্রধান অতিথির ভাষণে এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

পবিত্র মাহে রবিউল আউয়ালকে স্বাগত জানিয়ে আয়োজিত এ সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল ‘রাসূলুল্লাহ (সা) এর ভালোবাসা ও সুন্নাতের অনুসরণে জীবন গঠন’। মসজিদ বায়তুশ শরফ ঢাকার ইমাম ও খতীব মওলানা জাফর আহমদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী।

বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লি: এর সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল মালেক মোল্লা ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আবদুল লতীফ মাসুম। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: শহীদুল হক।

আলোচনায় অংশ নেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডীন প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান, বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. রহমান হাবিব, আল হাদীস ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুঈনুল হক, কবি ও দার্শনিক মুসা আল হাফিজ এবং ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রফেসর ড. এ কে এম মাসুম। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ ঢাকা শাখার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।

ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আরো বলেন, "দুনিয়ার সকল জ্ঞানী-মনীষী একবাক্যে স্বীকার করেন যে, 'বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা) পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব। আল্লাহ তাআলা তাঁকে মানব জাতির আদর্শ ও পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রেরণ করেছেন।' মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উপর কর্তব্য নবীজির সুন্দর চরিত্রাদর্শ ও শিক্ষাসমূহের সৌন্দর্য ও যৌক্তিকতা দুনিয়াবাসীর সামনে তুলে ধরা। পশ্চিমা দুনিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে যেসব অপপ্রচার চালাচ্ছে যুক্তিপূর্ণভাবে সেগুলোর জবাব দিতে হবে।

পবিত্র হাদীসের বাণী হচ্ছে, হারাম খাদ্য দিয়ে যে শরীর গঠিত তা বেহেশতে প্রবেশ করবে না। অথচ দুঃখজনকভাবে বিগত সরকারের আমলে এমন লোকেরা জাতীয় ব্যাংক ও বাজার লুটপাট করেছে, যাদের অনেকের বাহ্যিক অবয়ব দেখলে পাক্কা নামাযির মতো মনে হবে। বিগত সরকার দেশটাকে চোরের দেশে পরিণত করেছিল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একে ভালো মানুষের দেশে পরিণত করতে চায়।"

তিনি বলেন, "বাংলাদেশে সবধর্মের লোকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা অক্ষুন্ন ও পারস্পরিক সম্প্রীতি বিরাজমান। প্রত্যেক ধর্মের অনুসারী এখানে তাদের ধর্মকর্ম পালনে সম্পূর্ণ স্বাধীন। তার জ্বলন্ত উদাহরণ, সাম্প্রতিক ক্রাইসিসের সময় মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকরা মন্দির পাহারা দিয়ে প্রমাণ করেছেন, সাম্প্রদায়িক উস্কানী ও অশান্তি সৃষ্টির যে কোনো পাঁয়তারা ব্যর্থ করে দিতে তারা বদ্ধপরিকর। যারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর করতে চায়, আমরা তাদের ষড়যন্ত্রকে অকার্যকর করব।"

সেমিনারে বক্তাগণ জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরে নবী জীবন ও ইসলামী শিক্ষা সিলেবাসভুক্ত করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

তারা আরো বলেন, "হাদীসের ভাষ্য অনুযায়ী নবীজির মাদানী জীবন ও খোলাফায়ে রাশেদার ৩০ বছরের শাসনকালের সুন্নাত অনুসরণ করা প্রত্যেক উম্মতের উপর কর্তব্য। কাজেই আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সুন্নাতের আলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ আমদেরকে নিতে হবে।"