বিশ্ব ইজতেমা শুরু; শীত-বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজির লাখো মুসল্লি
টঙ্গীর তুরাগ তীরে আমবয়ানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) ফজর নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা আহমদ বাটলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আর তা তাৎক্ষণিকভাবে বাংলায় তরজমা করছেন মাওলানা নুরুর রহমান।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. হাবিব উল্ল্যাহ্ রায়হান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মাওলানা আহমদ বাটলা সাহেবের বয়ানের পর সকাল ১০টায় তালিম করবেন পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক সাহেব। তার তালিমের পরই দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজের প্রস্তুতি শুরু করা হবে। জুমার নামাজ পড়াবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের সাহেব। বাদ জুমা বয়ান করবেন জর্ডানের মাওলানা খতিব সাহেব, বাদ আছর বাংলাদেশের হাফেজ মাওলানা জুবায়ের সাহেব ও বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা আহমদ লাট সাহেব বয়ান করবেন।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম জানিয়েছেন, ইজতেমায় গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের ছয় হাজার সদস্যের পাশাপাশি র্যাব, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ এবং পোশাকে ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
শীত ও বৃষ্টিসহ নানা ভোগান্তি উপেক্ষা দেশবিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকা। শুক্রবার ফজর নামাজের পর আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষ হবে আগামী রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে। ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শুরু হবে।
প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমা শুরুর দু-দিন আগে বুধবার থেকেই মুসল্লিরা ময়দানে স্থান না পেয়ে ময়দানের আশপাশের বিভিন্ন অলিগলি, ফুটপাত সড়ক ও আশেপাশের খোলা জায়গায় অবস্থান নিয়েছেন। ইতোমধ্যে মুসল্লির আগমনে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে ইজতেমা ময়দান।
বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পরপরই ইজতেমা ময়দানে জড়ো হওয়া লাখ লাখ মুসল্লি বৃষ্টির বাগড়ায় পড়েন। এতে ভোগান্তি বাড়ে তাদের। বৃহস্পতিবার দিনভর আকাশ মেঘলা থাকলেও সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। কয়েক দফায় সামান্য গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছিল। তবে মাগরিবের নামাজের পর থেকে বৃষ্টি নামা শুরু হয়েছে। এতে বেশ ভোগান্তিতে পড়েন মুসল্লিরা।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, বিশ্ব ইজতেমা ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইজতেমায় গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের ছয় হাজার সদস্যের পাশাপাশি র্যাব, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ এবং পোশাকে ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
এবারের ইজতেমায় এ পর্যন্ত তিনজন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার দুজন ও বৃহস্পতিবার একজন মুসল্লির মৃত্যু হয়। তারা হলেন—ইউনুছ মিয়া (৬০), জামান (৪০) ও আব্দুস সাত্তার (৭০)। এদের মধ্যে ইউনুছ মিয়ার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল থানায়, জামানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এবং আব্দুস সাত্তারের বাড়ি নেত্রকোণা জেলায়। তিনজনই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।