২০২৩ সালে গ্রিসে বৈধতা পেয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ বাংলাদেশি
২০২৩ সালে গ্রিসে বৈধতা পেয়েছে ৩ হাজার ৪০৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক। এথেন্স-ঢাকা সমঝোতা স্মারক চুক্তির আওতায় এই বৈধতা পেয়েছে বাংলাদেশিরা। দেশটির আশ্রয় ও অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি ইনফোমাইগ্রেন্টসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির আওতায় ২০২৩ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে অনিয়মিতভাবে থাকা বাংলাদেশিদের নিয়মিত হতে আবেদন করার সুযোগ দেয় গ্রিস। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তির আওতায় আবেদনের প্রক্রিয়া শেষ হয়।
শর্ত হিসেবে আবেদনকারীকে ন্যূনতম দুই বছর মেয়াদি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির আগে থেকে গ্রিসে বসবাসের প্রমাণ এবং নিয়মিত হলে চাকরির নিশ্চয়তার প্রমাণ জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়।
অনিয়মিত অভিবাসীদের এথেন্সে বাংলাদেশি দূতাবাসে প্রাথমিক নিবন্ধন পরবর্তীতে গ্রিক সরকারের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আবেদন করার নিয়ম রাখা হয়।
ইনফোমাইগ্রেন্টসের অনুরোধে ১৫ ফেব্রুয়ারি ইমেইলে দুই দেশের মধ্যে সম্পন্ন চুক্তির আওতায় পুরো বছরের পরিসংখ্যান জানিয়েছে আশ্রয় ও অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ।
গ্রিক কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, সমঝোতা চুক্তির আওতায় ২০২৩ সালে নিয়মিতকরণের জন্য আবেদন করেছেন মোট ১০ হাজার ৩৩৭ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি।
যাদের মধ্যে বিভিন্ন ত্রুটির কারণে বাতিল হয়েছে এক হাজার ১৯টি আবেদন। তবে প্রত্যাখাত আবেদনগুলোর মধ্যে শর্তপূরণ করে আবারো আপিলের সুযোগ রয়েছে বলে ইনফোমাইগ্রেন্টসকে নিশ্চিত করেছে এথেন্সের বাংলাদেশ দূতাবাস।
গত বছর প্রাক-নিবন্ধনকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বৈধতার জন্য আবেদন করেছেন ১১৩ জন অনিয়মিত বাংলাদেশি।
এছাড়া, মোট আবেদনের মধ্যে বিবেচনাধীন আছে পাঁচ হাজার ৯১০টি আবেদন। অর্থাৎ এসব অভিবাসীদের সবাই প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ শেষে গ্রিক কর্তৃপক্ষ থেকে বৈধতার সত্যয়ন পেয়ে রেসিডেন্স পারমিট বা স্মার্ট কার্ডের অপেক্ষায় আছেন।
অন্যদিকে, অনিয়মিতদের মধ্যে গত বছর রেসিডেন্স পারমিট বা বৈধতা পেয়েছেন তিন হাজার ৪০৫ জন বাংলাদেশি।
সাগর পাড়ি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন নিরুৎসাহিত করতে নানা পরিকল্পনা হাত নিয়েছে ভূমধ্যসাগরের তীরের দেশ গ্রিস। দেশটির অভিবাসনমন্ত্রী সম্পতি বলেছেন, ‘২০২৪ সালে হবে বৈধ অভিবাসনের বছর।’
গ্রিসে বৈধভাবে থাকার পথ আরো সুগম করতে এই সংক্রান্ত আইন সংশোধনেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে বৈধভাবে বসবাসের অনুমতি বা রেসিডেন্স পারমিট দিতে দেশটির বিদ্যমান প্রশাসনিক কাঠামো আধুনিকায়নে একটি আইনের খসড়া তৈরি করছে গ্রিসের অভিবাসন ও আশ্রয় মন্ত্রণালয়।
দেশটির অভিবাসন ও আশ্রয়মন্ত্রী দিমিত্রিস কাইরিদিস সম্প্রতি দেশটির সংসদে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘২০২৪ সালে প্রথম ছয় মাসে দেশে নতুন চারটি বায়োমেট্রিক ডেটা কালেকশন সেন্টার স্থাপন করা হবে। এর তিনটি হবে রাজধানী এথেন্সে আর একটি হবে থেসেলোনিকিতে।’
তিনি বলেন, একজন অভিবাসী নিয়মিত পথে দেশটিতে এসে, বৈধভাবে চাকরি করে, কর দেন। কিন্তু নিজেদের থাকার অনুমতিপত্র নবায়নের আবেদন করতে গিয়ে তাদের জটিলতা পোহাতে হয়।
দেশটির আট লাখ ৫০ হাজার অভিবাসনের আবেদনের নথিপত্রও ২০২৬ সালের প্রথমার্ধ্বের মধ্যেই ডিজিটাল করা হবে বলেও জানান তিনি। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রম দ্রুততর হবে।