দোকান দখল নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ; ২ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫০
সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই বিভিন্ন জেলায় বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এবার নেত্রকোণার কেন্দুয়া পৌর শহরে দোকান দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয়পক্ষের দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে জেলার কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ চলে। কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ৫ জন হলেন, উপজেলার বাট্রা গ্রামের লিটন খানের ছেলে রনি খান (২২), আব্দুল কদ্দুছের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৩), গোলাম মোস্তাফা খানের ছেলে রাজন খান, কান্দিউড়া গ্রামের অনছার উদ্দিনের ছেলে বাবর উদ্দিন ও অবিকুল মিয়া। অবিকুল মিয়ার পুরো পরিচয় জানা যায়নি।
বাকি আহতদের মধ্যে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৫ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্যরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রনি খান ও রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা অরুপ কুমার সরকার।
কেন্দুয়া থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে একটি দোকানের মালিকানা বিরোধে দখল নিয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদিন ভুইয়ার সমর্থক জামাল উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভুইয়ার সমর্থক আল-আমিনের মাঝে বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে গতকাল রাত ৮টার দিকে জয়নাল আবেদিন ভুইয়া ও দেলোয়ার হোসেন ভুইয়ার অনুসারীদের মাঝে সংঘর্ষ বাঁধে। সে সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই সংঘর্ষ প্রায় দুই ঘণ্টা চলার পর রাত ১০ টার দিকে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এখন পর্যন্ত থানায় কোন পক্ষই মামলা করেনি। তাই এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন মিজানুর রহমান।
সংঘর্ষের বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাইফুল আলম বলেন, ‘রনি খান ও রফিকুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আল-আমিন খন্দকার যুবলীগ কর্মী। অন্যায়ভাবে জামাল উদ্দিনের দোকান দখল করতে গেলে দিগদাইর ও বাট্রা গ্রামবাসী দুই পক্ষ হয়ে সংঘর্ষে জড়ায়।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী জানান, এই বিষয়টি বিএনপির কোন অভ্যন্তরীণ বিষয় না। যুবলীগের কর্মী আল আমিন জোরামলে একটি দোকান দখল করতে গেলে দিগদাইর ও বাট্রা গ্রামবাসীর মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা হয়।
কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া বলেন, ‘এই সংঘর্ষের সাথে আমার কোন লোকজন জড়িত নয়। এটা একটি দোকান দখল নিয়ে রফিকুল ইসলাম হিলালীর লোকজনদের মধ্যে বিবাদ হয়। পরে তা কয়েকটি গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়ান।’