বঙ্গভবন এলাকা ত্যাগ করলেন বিক্ষোভকারীরা
শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের জেরে দেশের জনগণ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রপতির মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ করে একদল জনতা। তারা নিরাপত্তা বেরিকেড ভেঙ্গে ফেলার চেষ্টা করলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়ে। এতে তিনজন আহত হন। এদিকে রাষ্ট্রপতি বৃহস্পতিবারের মধ্যে পদত্যাগ করবেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের এমন আশ্বাসে একে একে বঙ্গভবন এলাকা ছাড়ছেন বিক্ষোভকারীরা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলমসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তারা বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ নিশ্চিতের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা বঙ্গভবন এলাকা ছাড়তে শুরু করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মধ্যরাতের পরপর বিক্ষোভকারীরা একে একে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও সেখানে এখনও বেশকিছু উৎসুক জনতার উপস্থিতি রয়েছে। তবে, বঙ্গভবন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
এর আগে, দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে বঙ্গভবনের দিকে যাত্রা শুরু করে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা কমিটি। হাইকোর্ট মাজার মোড় এলাকায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। কিন্তু বাধা অতিক্রম করে বঙ্গভবন পর্যন্ত এগিয়ে যায় তারা। সেখানে তারা বঙ্গভবনের সামনের খালি জায়গায় অবস্থান করতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। উপায় না পেয়ে বঙ্গভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে তারা।
পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিক্ষোভকারীদের একটি অংশ হঠাৎ বঙ্গভবনের সামনের ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেন। সে সময় বিক্ষোভকারীদের সামলাতে সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। শুরু হয় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি। এতে তিনজন আহত হন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট দেশত্যাগ করেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার দেশত্যাগের পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।
সম্প্রতি একটি পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, (পদত্যাগপত্র সংগ্রহ করার) বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।
এরপর নতুন করে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারীরা।