আজ পদ্মা সেতু প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী
বরাদ্দ থেকে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা কম খরচে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ গত ৩০ জুন সম্পূর্ণ হয়েছে। বেঁচে যাওয়া টাকাগুলো সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে। আর সেতু নির্মাণে আনুষঙ্গিক সব কাজ শেষ হওয়ায় আজ শুক্রবার (৫ জুলাই) প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে মাওয়ায় অনুষ্ঠিত হবে সুধী সমাবেশ।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘নানা অনিশ্চয়তার মধ্যেই আমাদের কাজটি সম্পূর্ণ করতে হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার সরে যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টায় আমরা সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। মানুষকে একটি সুন্দর সেতু তৈরি করে দিতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমাদের সবশেষ বরাদ্দ থেকে ১ হাজার ৮৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কম খরচ হয়েছে। আমরা ওই টাকা নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে দেব।’
শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এটি অনেক বড় একটি প্রকল্প। আমাদের কিছু ক্লেইম ছিল। নদীশাসন ও কারিগরি কিছু কাজ বাকি ছিল। বড় কাঠামো তৈরির পর ডিফেক্ট লাইবিলিটি পিরিয়ড থাকে। এই সময়ে অবকাঠামোর ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে (যেমন কোথাও রং উঠে গেছে, কোথাও কিছুটা কাজ বাকি থেকে গেছে ইত্যাদি) তা সংশোধন করা হয়। ঠিকাদারেরও বেশ কিছু ক্লেইম ছিল। যে কারণে বারবার আমাদের মিটিং করতে হয়েছে। অর্থাৎ এই সবগুলো কাজ এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে আমাদের কাজ এখন সম্পূর্ণ। গত ৩০ জুনই সম্পন্ন হয়েছে।’
জানা গেছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি উপলক্ষে সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষ। বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথি ছাড়াও থাকবেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে বরণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা আর সর্বাত্মক প্রস্তুতি থাকার কথা জানিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক আবু জাফর রিপন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ৫ জুলাই বিকেলে পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাওয়া এলাকায় আসার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। মূলত পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজের মেয়াদ সমাপ্তি উদযাপনে প্রধানমন্ত্রী আসবেন। বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথিসহ যারা এই সেতুর কাজে বিভিন্ন সময় অংশ নিয়েছেন, তাদের নিয়ে সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সংশ্লিষ্টদের কথা শোনার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন ও সব দপ্তরের অংশগ্রহণে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নিতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাওয়ায় প্রথম পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। এরপর নানা প্রতিবন্ধকতায় আর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা শেষে যাত্রা শুরু হয় দেশের আলোচিত প্রকল্পটির মূল কাজ। যার সবশেষ মোট বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা।