পটুয়াখালীর পথে প্রধানমন্ত্রী
গত রবিবার রাত থেকে উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৬ জন। ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে পটুয়াখালীর উদ্দেশে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ মে) বেলা ১১টায় হেলিকপ্টারযোগে রওনা করেন তিনি।
জানা গেছে, দুর্যোগকবলিত মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা এলাকা পরিদর্শন শেষে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কলাপাড়ার খেপুপাড়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন হেলিপ্যাডে অবতরণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কলাপাড়া পৌর শহরের সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজ মাঠে দুই হাজার দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করবেন।
দুপুর দেড়টায় কলাপাড়ার শেখ কামাল ব্রিজ পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা। এরপর পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্মেলনকক্ষে বরিশাল বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।বিকেল ৫টায় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের হেলিপ্যাড থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর কলাপাড়ায় আসার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পুরো কলাপাড়া শহর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। শহরে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। তার আগমন উপলক্ষে উপকূলবাসীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি প্রতিনিধি দল বুধবার কলাপাড়া পৌঁছেছেন।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কলাপাড়া ছাড়াও পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করবেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপির নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু, আনিসুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুর রহমান টিটু প্রমুখ।
বাহাউদ্দিন নাছিম জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। দলের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সরকারের পক্ষ থেকে প্রাথমিক হিসাবে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দেড় লাখের বেশি বাড়িঘর সম্পূর্ণ ও আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাড়ে ৩৭ লাখ মানুষ। আর কেড়ে নিয়েছে ১২টি প্রাণ।
প্রবল জোয়ারের তোড়ে বহু জায়গায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ উপকূলের বহু এলাকা। জলোচ্ছ্বাসের ১০ থেকে ১২ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায় বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন।
জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা সেখানে। ভেসে গেছে উপকূলের বহু মাছের ঘের, প্লাবিত হওয়া উপকূলের নিম্নাঞ্চলে ঢুকে পড়েছে লবণাক্ত পানি।
১৫ বছর আগে বাংলাদেশের ভূমিতে ঘূর্ণিঝড় আইলা যে প্রলয় চালিয়েছিলো, রেমালের দীর্ঘসময় ধরে চালানো তাণ্ডবেও একই রকমের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে বলছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা কর্মকর্তারা।