ভিসা জটিলতা
গ্রিসে বছরে ৪ হাজার কর্মীর জায়গায় ২ বছরে গেছে মাত্র ১১৪ জন
ভূমধ্যসাগরের ঠিক ওপরে অবস্থিত ইউরোপীয় দেশ গ্রিস। দেশটিতে কর্মী পাঠাতে দেখা দিয়েছে ভিসা জটিলতা। ফলে বছরে চার হাজার কর্মী পাঠানোর কথা থাকলেও দুই বছরে গেছে মাত্র ১১৪ জন। অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস না থাকায় এ সংকট তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
কর্মী পাঠাতে ২০২২ সালে গ্রিসের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হয়। সে অনুযায়ী, বছরে চার হাজার কর্মী নেওয়ার কথা। কৃষি শ্রমিক হিসেবে দেওয়া হবে পাঁচ বছরের ওয়ার্ক পারমিট। কিন্তু ২০২২ সালে গ্রিসে গেছেন মাত্র ১২ জন, ২০২৩ সালে ৭৭ জন এবং এ বছর ২৫ জন কর্মী।
জনশক্তি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্রিসে কর্মী পাঠানো নিয়ে সরকারের স্পষ্ট দিক নির্দেশনা নেই। এ ছাড়া ভিসা জটিলতাও রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘প্রতি বছর জব মার্কেটে ২৫ লাখ লোক ঢোকে। এর মধ্যে চার হাজার লোক গ্রিসে পাঠানো যাবে না, এটি মানা যায় না। এ কারণে কর্মী পাঠানোর ব্যাপারে যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের দেশের চুক্তি হয়েছে, সেসব দেশের একটি সার্ভিস সেন্টার বা কনস্যুলেট অফিস আমাদের দেশে খোলা যায় কিনা তা দেখতে হবে।’
এ নিয়ে গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৬ এপ্রিল এথেন্সে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে। ঢাকায় গ্রিসের দূতাবাস চালু হলে সংকট কেটে যাবে।
গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাস মিনিস্টার মোহাম্মদ খালেদ বলেন, গ্রিসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেছেন ঢাকায় গ্রিসের দূতাবাস স্থাপন তাদের প্রায়োরিটি লিস্টে রয়েছে।
তবে অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রিসের মত আরও অনেক দেশে মৌসুমি কর্মী পাঠানোর সুযোগ রয়েছে। সেদিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারপারসন শাকিরুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ইউরোপের এই শ্রমবাজারগুলোর নির্দিষ্ট সময়সীমা আছে। নির্দিষ্ট সময় পরে কর্মীকে আবার ফেরত আসতে হয়। তা ছাড়া কর্মী অনিয়মিত হলে প্রভাব পরে তার পরিবার তথা দেশের ওপর। উচ্চ অভিবাসন ব্যয় হলে কর্মী ফেরত আসতে চাইবে না। ফলে নষ্ট হবে শ্রমবাজার।
গ্রিসের কৃষি, পর্যটন, নির্মাণ ও তৈরি পোশাক শিল্প খাতে বিদেশি কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।