জাতীয় চিড়িয়াখানায় গাধার সংখ্যা বেশি হওয়ায় বিক্রির উদ্যোগ
রাজধানী ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা। ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় চিড়িয়াখানাটি। পরবর্তীকালে ১৯৭৪ সালে বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তরিত হয় এটি। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ দর্শনার্থী ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন।
রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানায় গাধা আছে ১৩টি। তবে গাধার জন্য নির্ধারিত জায়গার ধারণক্ষমতা ছয়টি। গাধার মতো চিড়িয়াখানায় জায়গার তুলনায় ঘোড়া, সাপ, জলহস্তী, পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণীর সংখ্যা বেশি। তাই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বাড়তি প্রাণীগুলোকে বিক্রি অথবা অবমুক্ত করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
এ জন্য প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রেখে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে।
জাতীয় চিড়িয়াখানায় থাকা প্রাণী ও পাখির মধ্যে ময়ূর ও হরিণ বিক্রির অনুমোদন রয়েছে। ধারণক্ষমতার বেশি হয়ে গেলে প্রতিটি হরিণ ৫০ হাজার টাকা এবং ময়ূর ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। অবশ্য অন্য প্রাণী ও পাখি বিক্রির অনুমোদন নেই।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ধারণক্ষমতার বেশি থাকা ১০ প্রজাতির মধ্যে ৬ প্রজাতির প্রাণী বিক্রির জন্য অনুমোদন চেয়েছে। সেগুলো হলো গাধা, আরবিয় ঘোড়া, দেশি ঘোড়া, ইমু পাখি, দেশি কবুতর ও জালালী কবুতর। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এখনো এর অনুমোদন পায়নি।
বিক্রি করতে হলে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, মূল্য নির্ধারণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে সেই দামে বিক্রি করা যাবে।
বিক্রি ছাড়াও ১১টি অজগর সাপ বনে অবমুক্ত করার জন্য বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা, ৬টি জলহস্তি প্রাণী বিনিময়ের মাধ্যমে দেশি–বিদেশি চিড়িয়াখানা কিংবা সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা এবং ১৭০টি কানি বক ও ২০০টি ওয়াক পাখি প্রকৃতিতে অবমুক্ত করার জন্যও অনুমতি চেয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, পরবর্তীতে আরও এসব প্রজাতির পশুপাখি বিনিময় ও অবমুক্ত করতে চাইলে আবার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
প্রকৃতিতে পশুপাখি ফিরিয়ে আনতে চিড়িয়াখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে উল্লেখ করে রাজশাহীর এই চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ফরহাদ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ পশুপাখি বিলুপ্তির পথে। চিড়িয়াখানায় পশুপাখির প্রজনন ঘটিয়ে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা যায়। এতে কিছুটা হলেও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কাজে আসবে।